জানা গেছে, পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটি থানার অন্তর্গত নিয়ামতপুর রহমান পাড়ায় শুক্রবার রাত ১০ টা নাগাদ শুটআউটের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতের অন্ধকারে মোটরবাইক চেপে দুই দুষ্কৃতী আচমকাই উপস্থিত হয়। এরপর তারা খুব কাছ থেকে জাভেদ বারিক নামে এক ব্যক্তির মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরায় এই পুরো শুটআউটের দৃশ্য ধরা পড়েছে।
রাস্তার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে স্পষ্ট দেখা গেছে, রাস্তায় দু’জন বাইক নিয়ে অপেক্ষা করছিল। জাভেদ সেখান দিয়ে হেঁটে যেতেই তার পিছনে ধাওয়া করে খুব কাছ থেকে কপাল লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। তারপর দ্রুত বাইক নিয়ে উধাও হয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে জাভেদ। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রক্তাক্ত জাভেদকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, মৃত জাভেদ বারিক আসানসোল পুরনিগমের অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তাও সেটা বেশ কয়েক বছর আগে। বর্তমানে তিনি থাকতেন জলপাইগুড়িতে। সেখানেই তাঁর জমি–জায়গা রয়েছে। তবে কয়েকদিন আগেই তিনি নিয়ামতপুরে নিজের পৈতৃক বাড়িতে এসেছিলেন বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। শুটআউটের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দুষ্কৃতীদের এখনও পর্যন্ত পুলিশ গ্রেপ্তার করতে না পারায় স্থানীয়দের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিয়ামতপুর লাগোয়া অঞ্চলে বেশ কিছুদিন ধরেই দুষ্কৃতীদের দাপাদাপি বাড়ছে। শুক্রবার রাতের ঘটনায় সেই আশঙ্কাই আরও প্রকট হল।
এসিপি জাভেদ হুসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গুলি চালানো দু’জন দুষ্কৃতীর পরিচয় জানতে চেষ্টা করছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ব্যক্তিগত শত্রুতা নাকি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে খুন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
একই সঙ্গে জাভেদের সাম্প্রতিক সময়ের গতিবিধি, তাঁর সঙ্গে কারও বিরোধ বা বিবাদ ছিল কি না, সেটাও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি ফরেনসিক ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে তারা।
শুক্রবার রাতের এই রোমহর্ষক শুটআউটের পর নিয়ামতপুর সহ আসানসোলের বিস্তীর্ণ এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধেয় লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় একটি খুনের ঘটনা ঘটে। চামড়ার কারখানার কর্মী বিলকিস বিবিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুন করা হয়। পুলিশ সূত্রে প্রাথমিক অনুমান, পারিবারিক টানাপোড়েন থেকেই এই হত্যাকাণ্ড। স্থানীয় সূত্রে খবর, বিলকিস বিবি এস এম ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি চামড়ার কারখানায় কাজ করতেন। সেদিন সন্ধে সাড়ে ছ’টা নাগাদ ছুটি শেষে কারখানা থেকে বেরোনোর সময় হঠাৎই বাইকে করে আসে দু’জন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে একের পর এক কোপ মারে বিলকিসকে। মুহূর্তে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। বাইরে চিৎকার শুনে কারখানার অন্যান্য কর্মীরা বাইরে বেরিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। প্রথমে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, পরে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলে চিকিৎসকরা বিলকিসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।