• ফের খুন তৃণমূল কর্মী, রাস্তায় শাবল দিয়ে পিটিয়ে মারা হল, সিসি ক্যামেরায় ভয়াবহ ছবি...
    আজকাল | ২৯ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিবাদ থামাতে গিয়ে খুন হলেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সঞ্জয় বর্মন (৩৭)। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কোচবিহারের মাথাভাঙা ১নং ব্লকের জোরপাটকি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। নিহত সঞ্জয় পেশায় প্লাইউড কারখানার শ্রমিক ছিলেন এবং স্থানীয়ভাবে সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সমগ্র অঞ্চলে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে মনসা পুজোর প্রসাদ খেতে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়েছিলেন সঞ্জয়। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ প্রসাদ খেয়ে বাড়ি ফেরার পথে তিনি লক্ষ্য করেন এলাকার দুই বাসিন্দা অজয় বর্মন ও মান্টু বর্মন নিজেদের মধ্যে বচসায় জড়িয়ে পড়েছে। সঞ্জয় দুই পক্ষকে শান্ত করতে গেলে আকস্মিকভাবে তারা লোহার শাবল নিয়ে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। প্রথমে মাথায় সজোরে আঘাত হানার পর ধারাবাহিকভাবে তাকে এলোপাথারি মারধর করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে সঞ্জয়। কিছুক্ষণ পর স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার পরই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। 

    স্থানীয়দের আক্ষেপ, সামান্য বচসার মধ্যস্থতা করতে গিয়ে প্রাণ দিতে হল এক নিরপরাধ তৃণমূল কর্মীকে। পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত অজয় বর্মন ও মান্টু বর্মন দুজনেই পেশায় কাঠমিস্ত্রি। ওই ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই মাথাভাঙা থানার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তারা হেফাজতে রয়েছে এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

    নিহতের পরিবার শোকে ভেঙে পড়েছে। নিহত তৃনমূল কর্মীর ভাই মিঠুন বর্মন সাংবাদিকদের বলেন, 'আমার ভাই কোনো দোষ করেনি। শুধু ঝগড়া থামাতে গিয়েই প্রাণ হারাতে হল। আমি দোষীদের ফাঁসি চাই।'

    জোরপাটকি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পরেশ চন্দ্র বর্মন এই ঘটনাকে অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেন। তিনি জানান, 'এই হত্যাকারীদের কঠোরতম ও সর্বোচ্চ শাস্তি প্রাপ্য।' 

    ওই ঘটনার পর শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার দুটিমান ভট্টাচার্য জানান, প্রথমে খবর পাওয়া যায় এটি একটি পথ দুর্ঘটনা। কিন্তু সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় যে এটি খুন। 

    পুলিশ সুপার আরও বলেন, 'প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, একটি বচসার সময়ে অজয় বর্মন শাবল দিয়ে সঞ্জয় বর্মনের মাথায় আঘাত করে। পরে অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।' সঞ্জয় বর্মনের আকস্মিক মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবার ও আত্মীয়স্বজন। স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরাও শোকে স্তব্ধ।
  • Link to this news (আজকাল)