• কয়েকশো গ্রাহকের তথ্য পাচার অভিযুক্ত ব্যাঙ্ককর্মীদের
    আনন্দবাজার | ২৯ আগস্ট ২০২৫
  • প্রায় আড়াই কোটি টাকার সাইবার প্রতারণার মামলায় রাজ্য পুলিশের সাইবার অপরাধ শাখার হাতে গ্রেফতার হওয়া বেসরকারি ব্যাঙ্কের পাঁচ আধিকারিক প্রায় দু’বছর ধরে নিজেদের ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের তথ্য পাচার করেছিল জামতাড়া চক্র-সহ বিভিন্ন জালিয়াতদের কাছে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে গোয়েন্দারা মনে করছেন, নিজেদের ব্যাঙ্কের কয়েকশো গ্রাহকের তথ্য তারা বিভিন্ন সময়ে তুলে দিয়েছিল জালিয়াতদের হাতে। যার মধ্যে একশোরও বেশি গ্রাহক জালিয়াতির শিকার হয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন। বাকিদের ক্ষেত্রে চেষ্টা করেও প্রতারকেরা কোনও কারণে সফল হয়নি।

    এক পুলিশকর্তা জানান, ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের বিভিন্ন নথি ও তথ্য খতিয়ে দেখে এবং ধৃতদের জেরা করে কোন কোন গ্রাহক এই প্রতারণা-চক্রের শিকার হয়েছেন, তা চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে যত জনকে তারা প্রতারিত করতে পেরেছে, তার কয়েক গুণ বেশি গ্রাহকের নথি হাতিয়ে জালিয়াতদের জোগান দিয়েছিল ধৃতেরা। ওই পুলিশকর্তার দাবি, ধৃতেরা যে শাখার দায়িত্বে ছিল, সেই শাখার বদলে নিজেদের ক্ষমতাবলে অন্য শাখার গ্রাহকদের তথ্য হাতিয়ে তা তুলে দিয়েছিল জালিয়াত-চক্রের হাতে। গোয়েন্দারা আগেই জানতে পারেন, এনসিআরপি পোর্টালে ধৃত পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ৮০টির মতো প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। সেগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

    গ্রাহকদের মোটা অঙ্কের আমানত, জীবন বিমা বা অন্য বিমা প্রকল্পের টোপ দিয়ে প্রায় ২ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকার প্রতারণার একটি মামলার তদন্তে নেমে এক বেসরকারি ব্যাঙ্কের পাঁচ আধিকারিককে গত সপ্তাহে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের সাইবার অপরাধ শাখা। ধৃতদের মধ্যে ছিল ওই ব্যাঙ্কের হাজারিবাগ শাখার গ্রাহক সমন্বয় অফিসার যশবন্ত প্রসাদ, জামতাড়া শাখার গ্রাহক সমন্বয় অফিসার শুভম কুমার, সারাইধেলা শাখার সেলস ম‍্যানেজার সৌরভকুমার সিংহ, মেটিয়াবুরুজ শাখার সেলস ম‍্যানেজার আসাদ রাজা এবং মেটিয়াবুরুজ শাখার গ্রাহক সমন্বয় অফিসার ইয়াসির আরাফত।

    তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ধৃতেরা ছাড়া ওই ব্যাঙ্কের আরও কয়েক জন অফিসার এবং কর্মী পুলিশের নজরে রয়েছেন। তাঁদের বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ধৃতেরা ওই জালিয়াতি-চক্রের থেকে এবং তাদের নিজেদের ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্যের জোগান দিয়ে আর্থিক ভাবে কতটা লাভবান হয়েছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই বেসরকারি ব্যাঙ্ক ছাড়া আরও কয়েকটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের অফিসার এবং কর্মীরা প্রতারণা-চক্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। আর কারা ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের ব্যাক্তিগত তথ্য জালিয়াতদের হাতে তুলে দিয়েছেন, তারও তদন্ত শুরু হয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)