চিত্র ১: সপ্তাহের মাঝামাঝি একটি দিন। সকাল ১১টা ৩৪ মিনিট। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের উল্টো দিকে স্বর্ণময়ী রোডে ঢুকতেই দেখা গেল একের পর এক ‘ডক্টরস চেম্বার’। তারই একটিতে ঢুকে রিসেপশনে জানতে চাইলাম, ‘একটা রিপোর্ট দেখিয়ে পরামর্শ নেওয়া যাবে?’ রিসেপশনে তরুণী কর্মীর কথামতো, ৬০০ টাকা ভিজ়িট দিয়ে অপেক্ষা। মিনিট ২০ পরে ডাক এল। চিকিৎসকের কাছে পৌঁছে, মোবাইলে এক আত্মীয়ের রিপোর্ট দেখালাম। পরের দিন ওই একই সময়ে আত্মীয়কে নিয়ে আসার পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক। কিন্তু দিনের ওই সময়ে তো হাসপাতালে থাকার কথা মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের রেডিয়োথেরাপির বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসকের! তিনি তখন বাইরে চেম্বার করছেন!
চিত্র ২: ওই দিনই দুপুর ২টো নাগাদ পৌঁছলাম বহরমপুরের লালদিঘি এলাকার আর একটি ‘ডক্টরস চেম্বারে’। রিসেপশনে ৭০০ টাকা ভিজ়িট জমা দিয়ে মিনিট সাতেকের অপেক্ষার পরে ঢুকলাম মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের অস্থি- শল্য বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসকের কেবিনে। হাঁটুর সমস্যা পরীক্ষা করে প্রেসক্রিপশন করে দিলেন তিনি। সরকারি হাসপাতালে ডিউটি আওয়ার্স বিকেল চারটে পর্যন্ত। তা হলে সেই সময়ের দু’ঘণ্টা আগে কী ভাবে অস্থি-শল্য চিকিৎসক বাইরে চেম্বার করছেন?
চিত্র ৩: পরের সপ্তাহের প্রথম দিন। বেলা ১২টা ৩৯ মিনিটে কলকাতার সিআইটি রোডে একটি নাক-কান-গলার চিকিৎসা কেন্দ্রে ফোন করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট চাইতেই, জানা গেল নাম থাকছে ১১৬ নম্বরে। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের ওই শিক্ষক-চিকিৎসক দুপুর ২টো থেকে চেম্বার শুরু করলেও, পরে নাম থাকায় রাত ৯টায় পৌঁছে অপেক্ষা করতে হবে। না হলে, পরের দিন ৩৫ নম্বরে নাম লেখালে দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ যেতে হবে। সপ্তাহের প্রথম দিন দুপুরে বাঁকুড়ার হাসপাতালে না থেকে কলকাতায় চেম্বার করছেন কী ভাবে?
চিত্র ৪: ওই সপ্তাহের আরও একটি মাঝামাঝি দিনে দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ পৌঁছলাম তমলুকের একটি ‘ডক্টরস চেম্বারে’। নাক-কান-গলার চিকিৎসককে দেখানোর জন্য নাম লেখানো হল। রিসেপশন থেকে জানানো হল, কয়েক মিনিটের দূরত্বে মেডিক্যাল কলেজে তিনি অস্ত্রোপচারে ব্যস্ত। শেষ করে আসবেন। কিছু ক্ষণ পরেই এলেন তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগের ওই চিকিৎসক। বিকেল চারটের আগেই, তিনি কী ভাবে বাইরে চেম্বারে এলেন?
বহু সময়ে সঙ্কটজনক রোগীর পরিজন অভিযোগ করেন, ‘বড় ডাক্তারবাবু তো ছিলেনই না!’ অভিযোগ যে অমূলক নয়, তারই প্রমাণ এই চারটি ঘটনা। ডিউটি আওয়ার্সের মধ্যে কী ভাবে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন? মুর্শিদাবাদের ক্যানসার চিকিৎসক বলেন, ‘‘একদমই উচিত নয়। কী সমস্যা হয়েছে, দেখে নিচ্ছি।’’ একই প্রশ্নের উত্তর জানতে মুর্শিদাবাদের এবং তমলুকের ওই দু’জন চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা ফোন ধরেননি। ওয়টস্যাপ এবং মেসেজের উত্তরও দেননি। আর বাঁকুড়ার ওই চিকিৎসকের সঙ্গে এক সোমবার বিকেল পাঁচটা