রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালের কাজ নিয়ে মামলা করতে পারে না রাজ্য, সুপ্রিম কোর্টে দাবি কেন্দ্রের
প্রতিদিন | ২৮ আগস্ট ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতিদের বিল পাশ করানোর সময়সীমা বেঁধে দেওয়া নিয়ে এবার নয়া দাবি মোদি সরকারের। কেন্দ্রের দাবি, এভাবে কোনও রাজ্য সরকার রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতিদের বিল পাশ নিয়ে সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করতেই পারে না। কেন্দ্রের যুক্তি, সংবিধানের ৩৬১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনও রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতির কার্যপদ্ধতি নিয়ে কোনও রাজ্য সরকার আদালতে মামলা দায়ের করতে পারে না।
তামিলনাড়ুর সরকার বনাম রাজ্যপাল দ্বন্দ্বে এই মুহূর্তে শুনানি চলছে রাষ্ট্রপতির রেফারেন্স বেঞ্চে।প্রধান বিচারপতি বিআর গভাই, বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি পিএস নরসিংহ, বিচারপতি অতুল এস চন্দুরকরের ওই প্রেসিডেন্সিয়াল রেফারেন্স বেঞ্চে কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর পক্ষ আদালতে তুলে ধরেন। তিনি সওয়ালে বলেন, “রাষ্ট্রপতি জানতে চেয়েছেন, কোনও রাজ্য সরকার কি অনুচ্ছেদ ৩২-এর ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করতে পারে?” এর সঙ্গেই সংবিধানের ৩৬১ অনুচ্ছেদের কথাও শীর্ষ আদালতের কাছে তুলে ধরেন তিনি। তাঁর দাবি, ওই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালরা বিশেষ রক্ষাকবচ পান, তাতে কোনও রাজ্য সরকার মামলা করতে পারে না।
কেন্দ্রের দাবি, রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালের ভূমিকা রাজ্য সরকার ঠিক করতে পারে না। আদালতে এ নিয়ে মামলাও করা যায় না। সংবিধানের ৩৬১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি বিল নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবে, কোনও আদালতের সামনে সেটার জবাবদিহি করতে তাঁরা বাধ্য নন।
গত ১২ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের দুই সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেয়, আইনসভায় পাশ করা কোনও বিল রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি কেউই অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখতে পারেন না। ওই বিল নিয়ে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তাদের। কিন্তু প্রশ্ন উঠছিল, সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতিকে এভাবে ‘নির্দেশ’ দিতে পারে কি? সুপ্রিম কোর্ট পালটা যুক্তিতে বলে, সংবিধানের ১৪২ নম্বর নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, শীর্ষ আদালত ‘সুবিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে’ আইনের ঊর্ধ্বে গিয়ে বিশেষ রায় দিতেই পারে। কিন্তু শীর্ষ আদালতের সেই রায়ে আপত্তি জানান খোদ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সংবিধানের ১৪৩ ধারা প্রদত্ত বিশেষ অধিকার বলে শীর্ষ আদালতের ওই রায় নিয়ে ১৪টি প্রশ্ন তুলে দেন তিনি। যার ফলে ওই রায় পর্যালোচনার জন্য পাঁচ সদস্যের প্রেসিডেন্সিয়াল রেফারেন্স বেঞ্চ তৈরি হয়। প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের নেতৃত্বের পাঁচ সদস্যের ওই বেঞ্চে কেন্দ্র জানিয়েছিল, রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতির দপ্তর রাজনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পন্ন। গণতান্ত্রিক প্রশাসনের থেকেও উৎকৃষ্ট আদর্শে বিশ্বাসী। তাই রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালের দপ্তরে যদি কোনও ত্রুটি থেকেও থাকে তাহলে সেটা ঠিক করতে হবে রাজনৈতিক ভাবে। অকারণ বিচারবিভাগের হস্তক্ষেপে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে।