• বিশেষ পুজো পরিক্রমার ঘোষণা পরিবহনমন্ত্রীর
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  • নতুন জুতো গলিয়ে হেঁটে ফোসকাপড়া পায়ে অল্প খুঁড়িয়ে কলকাতার অলিগলিতে হারিয়ে যাওয়া— দুর্গাপুজোয় এসব নতুন কিছু নয়। বরং, এই সামান্য শারদীয়-যন্ত্রণায় বাঙালি আনন্দ উপভোগই করে। তবে সঙ্গে শিশু থাকলে তা নিতান্তই সমস্যার হয়ে ওঠে। তাই সবদিক বিবেচনা করে পুজো পরিক্রমায় স্থল ও জলপথে বিশেষ পরিষেবার কথা ঘোষণা করলেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে মন্ত্রী জানালেন, এবারের পুজো পরিক্রমায় পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন নিগম তিনটি পরিষেবা শুরু করতে চলেছে।

    প্রথমত, সাবেকি বনেদি বাড়ির পুজো পরিক্রমা। এক্ষেত্রে, এসপ্ল্যানেড ট্রাম ডিপো থেকে সকাল ৮টায় যাত্রা শুরু করবে এসি ভলভো বাস। ভাড়া জনপ্রতি ২২০০ টাকা এবং ৫-১০ বছর শিশুদের জন্য ১৬৫০ টাকা। সঙ্গে থাকবে চা, জলখাবার ও দুপুরে বাঙালিয়ানা ভোজ। যাত্রাপথে থাকবে বদনচন্দ্র রায়ের বাড়ি, বেলুড় মঠ, শোভাবাজার রাজবাড়ি, রানি রাসমণির বাড়ি-সহ ১১টি বনেদি বাড়ি। দ্বিতীয়ত, শহরতলি থেকে কলকাতার বনেদি বাড়ির পুজো পরিক্রমা। এক্ষেত্রে বারাসত কলোনি মোড় থেকে সকাল ৮টায় ছাড়বে এসি ভলভো বাস। ভাড়া জনপ্রতি ২৩০০ টাকা এবং ৫-১০ বছর শিশুদের জন্য ১৭০০ টাকা। দেওয়া হবে জলখাবার, মধ্যাহ্নভোজ এবং বিকালে থাকবে স্ন্যাকস। যাত্রাপথে থাকবে চোরবাগান চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজো, জোড়াসাঁকো দাঁ বাড়ির পুজো, মানিকতলা সাহা পরিবারের পুজো-সহ মোট ৯টি বনেদি বাড়ি।

    তৃতীয়ত, ‘জলপথে উত্তরের বিশিষ্ট পুজো।’ এক্ষেত্রে মিলেনিয়াম পার্ক থেকে সকাল ১১টায় লঞ্চ ছাড়বে। ভাড়া জনপ্রতি ৯০০টাকা। যাত্রাপথে দেওয়া হবে প্যাকেটজাত জলখাবার এবং চা। যাত্রার সময়কাল আনুমানিক ৫ ঘণ্টা। এই পথে থাকবে আহিরীটোলা, কুমোরটুলি পার্ক, শোভাবাজার, জগৎ মুখার্জি পার্ক, বাগবাজার সার্বজনীন-সহ অসংখ্য মণ্ডপ। এছাড়াও রয়েছে ‘বিলাসবহুল বাসে পুজো পরিক্রমা।’ এক্ষেত্রে, ষষ্ঠী, সপ্তমী এবং নবমীতে এসপ্লানেড ও বারাসত থেকে সকাল ৯টায় ছাড়বে এসি বাস। যাত্রাপথে থাকবে বাদামতলা, সিংহী পার্ক, মহম্মদ আলি পার্ক, মুদিয়ালী, কলেজ স্কোয়্যার ইত্যাদি। তবে কেবল শহরেই নয়, এবার ধান্যকুড়িয়া-আড়বালিয়া এবং জয়রামবাটি ও কামারপুকুরেও পুজো পরিক্রমা করাতে উদ্যোগী দপ্তর। মন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রতি বাসে এবং লঞ্চে থাকবেন একজন ‘যাত্রীসয়াহক’ ও চিকিৎসার সরঞ্জাম। বুকিং করা যাবে সরাসরি বাস ডিপো থেকে অথবা অনলাইনে।

    প্রসঙ্গত, বাঙালি এখন শপিং মুডে। তাই পুজোর আগেই শহরে চালু হচ্ছে ‘শপিং স্পেশাল’ বাস পরিষেবা। মূলত হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশনকে কেন্দ্র করে চলবে এই পরিষেবা। পুজোর অন্তত পনেরো দিন আগে থেকেই ২৫টি করে অতিরিক্ত বাস নামানো হবে রাস্তায়। পরিস্থিতি অনুযায়ী বাসের সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত মন্ত্রীর। স্নেহাশিস বলেন, ‘কেনাকাটা করতে প্রচুর মানুষ কলকাতায় আসেন। যাতে তাঁদের কোনও সমস্যা না হয়, তাই এই বিশেষ পরিষেবা। চাহিদা থাকলে বাস আরও বাড়ানো হবে।’ শুধু তাই নয়, পুজোর ক’টা দিন রাতে বাড়ি ফেরা সহজ করতে থাকবে ‘নাইট সার্ভিস’ বাস। হাওড়া, শিয়ালদহ, বারাসতের দিকে এই বিশেষ বাসগুলি চলবে সারা রাত। পরিবহনমন্ত্রীর ভাষায়, ‘মেট্রোর সঙ্গে সমন্বয় রেখে বাস পরিষেবা সাজানো হচ্ছে।’ এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে পরিবহনমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী দিলীপ মন্ডল, সচিব সৌমিত্র মোহন, মন্ত্রীর আপ্তসহায়ক সুজয় কুমার শিকদার।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)