ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে শ্রীরামপুর পুরসভার বিশেষ উদ্যোগ
আজকাল | ২৮ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বর্ষার সময় খাপছাড়া হালকা বৃষ্টি। কখনও রোদের কারণে ডেঙ্গির মশার বাড়বাড়ন্ত বলে মনে করছেন পতঙ্গবিদরা। বুধবার রাজ্যের স্টেট আর্বান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (সুডা) তিন জন পতঙ্গবিদদের নিয়ে শ্রীরামপুর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি অভিজাত নির্মাণ সংস্থার বহুতলে অভিযানে যান। সেই দলে ছিলেন শ্রীরামপুর পুরসভার পুরপ্রধান গিরীধারী শাহ, চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সন্তোষ কুমার সিংহ, পিন্টু নাগ, তিয়াসা মুখোপাধ্যায়, কাউন্সিলর অসীম পণ্ডিত, বেবী দে। এছাড়া পুরসভার নোডাল অফিসার শৌভিক পাণ্ডা, শ্রীরামপুর থানার পুলিশ কর্মী ও পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রীরামপুর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের জিটি রোড লাগোয়া বহুতল সংস্থার আশ পাশেই ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই শ্রীরামপুর পুরসভা এলাকায় প্রায় ৮০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। আক্রান্তদের সিংহভাগই ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বহুতলের আশেপাশে। সেই কারণেই বুধবার পুরপ্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা ডেঙ্গি দমনে সারপ্রাইজ ভিজিট করেন। আবাসনের ভিতরে বেশ কিছু এলাকায় জমা জল ও প্লাস্টিকের পাত্রে বৃষ্টির জমা জল রয়েছে। যেগুলি ডেঙ্গির মশা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আদর্শ। নির্মীয়মাণ বহুতল পরিদর্শনের পর ডেঙ্গি মোকাবিলায় সেখানকার বাসিন্দাদের সচেতন করেন পতঙ্গবিদরা। তারপর বহুতলের কক্ষে একটি বৈঠক করে আবাসিকদের সচেতন করেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ক’দিন আগে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি সচেতনতা বাড়াতে গিয়ে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা চরম হেনস্থার শিকার হন বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই শ্রীরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেই ঘটনা যাতে আর পুনরায় না ঘটে, তার জন্য এবার পুলিশ প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে অভিযানে গেল পুরসভা।
এদিকে, দুর্গাপুজোর আগে শহরজুড়ে বাড়তি ভিড় ও মণ্ডপ নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গি প্রতিরোধে বিশেষ উদ্যোগ নিল কলকাতা পুরসভা। পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তর ইতিমধ্যেই সমস্ত পুজো কমিটিকে সতর্কতামূলক নির্দেশিকা পাঠিয়েছে। নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানানো হয়েছে, মণ্ডপ ঘিরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা বাধ্যতামূলক। কোথাও যেন জল জমে না থাকে, কারণ এটাই ডেঙ্গি বাহক মশার প্রধান প্রজনন ক্ষেত্র।
পুরসভার নির্দেশ, মণ্ডপের আশপাশের জমে থাকা জল দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে। বাঁশ ব্যবহার করলে ফাঁপা ডগাগুলো বালি বা মাটি দিয়ে ভরাট করতে হবে অথবা কাপড় দিয়ে শক্তভাবে বেঁধে দিতে হবে, যাতে জল জমে না থাকে। প্রতিটি মণ্ডপে নিয়মিত পরিদর্শন চালাতে হবে স্থানীয় কাউন্সিলর এবং বরো ভেক্টর কন্ট্রোল অফিসারদের।
পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, শারদোৎসবের ভিড় ও উচ্ছ্বাসে ডেঙ্গি যেন নতুন করে মাথাচাড়া না দেয়, সেটাই প্রধান লক্ষ্য। তাই সমস্ত পুজো কমিটিকে নিয়মিত মশা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে এবং পরিবেশ সচেতনতার দিকে বিশেষ মনোযোগ দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। শহরজুড়ে ইতিমধ্যেই ডেঙ্গি সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে উৎসবের মরসুম শুরুর আগেই পুরসভার এই পদক্ষেপকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের আশা, নির্দেশ মেনে চললে পুজোর আনন্দে ডেঙ্গি ভয়াবহ রূপ নিতে পারবে না।