• বীভৎস! গর্ভবতী স্ত্রীকে ব্লেড দিয়ে টুকরো টুকরো করে খুন! দেহ নদীতে ছুঁড়ল স্বামী...
    আজকাল | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক:  এক পাঁচ মাসের গর্ভবতী তরুণীকে নৃশংসভাবে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে নদীতে ফেলার চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল হায়দরাবাদের মেডিপল্লীতে। শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম প্রকাশ্যে আনেনি কর্তৃপক্ষ। তার বয়স ২৭ বছর এবং তিনি একটি অ্যাপ-ভিত্তিক ট্যাক্সি পরিষেবায় গাড়ি চালাতেন। পারিবারিক কলহের জেরে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। শনিবার সেই বিবাদের জেরেই তিনি নিজের ২১ বছরের গর্ভবতী স্ত্রীকে গলাটিপে খুন করেন।

    পরে ঘটনাটি গোপন করতে গিয়ে তিনি ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটান। পুলিশের দাবি, হেক্সা ব্লেড দিয়ে দেহকে টুকরো টুকরো করে ফেলেন অভিযুক্ত। এরপর মাথা, হাত ও পা আলাদা করে প্লাস্টিকের ছোট ছোট ব্যাগে ভরে তিন দফায় নিয়ে গিয়ে প্রথাপসিংগারামের কাছে মুসি নদীতে ফেলে আসেন। আর ঘরে রেখে দেন মাথা ও পা-বিহীন ধড়। মালকাজগিরি জোনের ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ পি ভি পদ্মজা সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার পর অভিযুক্ত প্রথমে নিজের বোনকে ফোন করে জানায়, তার স্ত্রী নিখোঁজ। বোনের সন্দেহ হলে তিনি এক আত্মীয়কে খবর দেন এবং তাকে নিয়ে যান থানায়। সেখানে প্রথমে নিখোঁজের নাটক করলেও পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়ে স্ত্রীকে খুন করার কথা স্বীকার করে।

    পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় ন্যায়বিধির (BNS) প্রাসঙ্গিক ধারায় খুন ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মৃতদেহের ধড় ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। ঘটনার পর থেকে নদীতে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হলেও এখনো পর্যন্ত দেহের অন্যান্য অংশ উদ্ধার করা যায়নি। এই কাজে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF) ও গ্রেটার হায়দরাবাদ মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের (GHMC) সাঁতারুরা অংশ নিয়েছেন। পুলিশ আরও জানিয়েছে, নিহত তরুণী ও অভিযুক্ত দু’জনেই ভিকারাবাদ জেলার বাসিন্দা। দীর্ঘদিন প্রতিবেশী থাকার পর এ বছর জানুয়ারিতে তারা আর্য সমাজ মন্দিরে প্রেমঘটিত বিবাহ করেন।

    এই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের পাশাপাশি ক্ষোভ ছড়িয়েছে। গর্ভবতী স্ত্রীকে এভাবে হত্যা করে দেহ টুকরো করার ঘটনায় সমগ্র রাজ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই ঘটনা সমাজ ও মানসিকতার ভয়াবহ সংকটকে প্রকাশ করে। পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও সম্পর্কের টানাপোড়েন কখনও কখনও দমন-পীড়নের সীমা ছাড়িয়ে নৃশংস হত্যার রূপ নেয়। এখানে স্ত্রী শুধু গর্ভবতী নারী হিসেবেই নয়, বরং একটি পরিবার ও ভবিষ্যতের প্রতীক ছিলেন। স্বামীর অস্বাভাবিক হিংস আচরণ পুরুষতান্ত্রিক কর্তৃত্ব, রাগ নিয়ন্ত্রণের অভাব এবং মানসিক ভারসাম্যহীনতার প্রতিফলন। সমাজে এমন ঘটনাগুলি নারীর নিরাপত্তা নিয়ে গভীর ভয় ও আস্থাহীনতা তৈরি করে। পাশাপাশি পারিবারিক সম্পর্কের মধ্যে আলোচনার পরিবর্তে হিংসার আশ্রয় নেওয়ার প্রবণতা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার তীব্রতাকেই সামনে আনে।
  • Link to this news (আজকাল)