• ফের তছনছ কাশ্মীর, বৈষ্ণদেবী যাত্রায় ভয়ঙ্কর বিপত্তি, ধসে চাপা পড়ে ৩০ জনের মৃত্যু, মৃত্যুমিছিল বাড়তে পারার আশঙ্কা
    আজকাল | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রবল বৃষ্টিতে আবারও তছনছ জম্মু ও কাশ্মীর। একটানা ভারী বৃষ্টির জেরে ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হল সাধারণ মানুষ থেকে পর্যটকদের। বন্যা, হড়পা বান, ভূমিধসের জেরে বিধ্বস্ত জম্মু ও কাশ্মীর। ক্রমেই বেড়ে চলেছে মৃত্যুমিছিল। এবার ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল বৈষ্ণদেবী যাত্রাপথে। ধসে চাপা এই রুটেই ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকেই। এখনও ধসে চাপা পড়ে আছেন বহু মানুষ। ভারী বৃষ্টি উপেক্ষা করেই চলছে উদ্ধারকাজ। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, জম্মু ও কাশ্মীরের কাটরায় অর্ধকুমারীর কাছে মাতা বৈষ্ণদেবী যাত্রা পথে হুড়মুড়িয়ে ধস নামে। প্রবল বৃষ্টির জেরেই ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। ধসে চাপা পড়ে এখনও পর্যন্ত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ২৩ জন। এখনও পর্যন্ত মাটির নীচে চাপা পড়ে আছেন অনেকে।‌ মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারার আশঙ্কা রয়েছে। 

    বৈষ্ণদেবী যাত্রাপথে ধসে মৃত্যুমিছিলের খবর পেয়েই শোকপ্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।‌ তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছিল। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরিস্থিতিতে রাজ্যের পাশে থাকবে কেন্দ্র। নিহত ও আহতদের পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছেন তিনি। 

    মঙ্গলবার থেকে এখনও পর্যন্ত একনাগাড়ে ভারী বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত জম্মু ও কাশ্মীর। কোথাও বন্যা, কোথাও ভূমিধস, কোথাও আবার হড়পা বানে। মঙ্গলবার থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধ্বংসলীলা চলছে জম্মু ও কাশ্মীরের জেলায় জেলায়। মঙ্গলবার ডোডা জেলায় হড়পা বানের জেরে একাধিক বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বৈষ্ণদেবী যাত্রা বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছিল প্রশাসন। রাতেই বৈষ্ণদেবী যাত্রাপথে ধস নামে। 

    গভীর রাত থেকেই একযোগে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। কোথাও কোথাও ভেঙে পড়েছে সেতু। বিদ্যুৎ বিভ্রাট থেকে মোবাইল নেটওয়ার্কেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। মঙ্গলবার পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার স্থানীয় বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে। 

    মৌসম ভবন জানিয়েছে, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত, টানা ছয় ঘণ্টা রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরে। গোটা রাজ্যে ২২ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড রয়েছে। গভীর রাত থেকে বৃষ্টির দাপট খানিকটা কমেছে। বুধবার জম্মু ও কাশ্মীরের সমস্ত স্কুল বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি আজ একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষাও বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। 

    পাশাপাশি রেল পরিষেবাও ব্যাহত হবে আজ। উত্তর রেলের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, আজ, বুধবার জম্মু ও কাটরা থেকে মোট ২২ টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ২৭টি ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। পাঠানকোট থেকে হিমাচল প্রদেশ পর্যন্ত রেল পরিষেবাও বাতিল করা হয়েছে। 

    প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই মেঘভাঙা বৃষ্টির পর মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে কিশ্তওয়াড়ে। মেঘ ভাঙা বৃষ্টি-বন্যায় প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৬০ জনের। তার মাঝেই ফের ভয়াবহ পরিস্তিতি জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়ায়। মেঘ ভাঙা বৃষ্টি, বন্যায় এখনও পর্যন্ত ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। আহত বহু। সাতজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ছয়জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় একই সময়ে কাঠুয়ার রাজবাগ এলাকার ঘাটি এবং আরও একাধিক গ্রামে প্রবল মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়। একটি গ্রাম সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)