এক মিনিটেই সব শেষ! ছোবল মারলে টেরও পাবেন না, জ্বালাও করবে না! এই রাজ্যে ভয়ঙ্কর বিষধর সাপের দেখা মিলল
আজকাল | ২৮ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: এক ছোবলেই ছবি! বর্ষায় সাপের উপদ্রব বাড়ে। গ্রামে, মফস্বলে সাপের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এবার এমন এক বিষধর সাপের খোঁজ পাওয়া গেল, যা ছোবল মারলে টেরও পাওয়া যায় না। জ্বালাও করবে না। শুধুমাত্র এক মিনিটের মধ্যেই বিষ ছড়িয়ে যাবে শরীরে। আর মুহূর্তের মধ্যে প্রাণ হারাবেন যে কেউ।
ভাবছেন কোথায়? সম্প্রতি বিহারে দেখা মিলল এই বিষধর সাপের। রাজ্যে এই পর্যন্ত মাত্র দুটি এই প্রজাতির সাপের হদিশ পাওয়া গিয়েছিল। সম্প্রতি সেই সংখ্যা আরও বাড়ল। যা ঘিরে বণ্যপ্রাণ সংরক্ষণকারীরা খুশি হলেও, আতঙ্কে তটস্থ গ্রামবাসীরা।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে ২১ সেপ্টেম্বর বিহারে ওই বিষাক্ত সাপের দেখা মিলেছিল। পাটনায় উদ্ধার করা হয়েছিল সাপটি। নেচার এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সোয়াইটির প্রোজেক্ট ম্যানেজার অভিষেক জানান, সাপটির নাম ওয়ালস ক্রেট। অত্যন্ত বিরল ও বিষধর সাপ এটি।
জানা গেছে, বিহারে এতদিন পর্যন্ত দুটি ওয়ালস ক্রেট সাপের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। তার মধ্যে পশ্চিম চম্পরন জেলাতেও একটি ক্রেট প্রজাতির সাপের সন্ধান মেলে। একটি কমন ক্রেইট, আরেকটি ব্যান্ডেড ক্রেট।বর্তমানে বিহারে ওয়ালস ক্রেট প্রজাতির সাপের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন। সম্প্রতি এই প্রজাতির আরও একটি সাপের খোঁজ পাওয়া গেছে।
বণ্যপ্রাণ নিয়ে ৩০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে অভিষেকের। বর্তমানে বিহারের পশ্চিম চম্পরন জেলার বাল্মিকী টাইগার রিজার্ভ এবং উত্তরপ্রদেশের কাতারনিয়াঘাট ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারিতে কাজ করছেন প্রোজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে। অতীতে একাধিক ভয়ঙ্কর প্রাণী, বিষাক্ত সাপ উদ্ধারের সাক্ষী থেকেছেন তিনি। তালিকায় রয়েছে কিং কোবরাও।
বাল্মিকী টাইগার রিজার্ভে নানা প্রজাতির বিষাক্ত সাপের আনাগোনা রয়েছে। সেখানেই দুটি ওয়ালস ক্রেট প্রজাতির সাপের সন্ধান পাওয়া গেছে। জানা গেছে, ১৯০৭ সালে কলোনেল ফ্র্যাঙ্ক ওয়াল প্রথমবার এই সাপের খোঁজ দেন। সেই অনুযায়ীই এর নামকরণ হয় ওয়ালস ক্রেট। উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে এই প্রজাতির তিনটি সাপ তিনি উদ্ধার করেন।
আরও পড়ুন:
সাধারণত হিমালয়ের পাদদেশে এবং পার্বত্য অঞ্চলে এই ওয়ালস ক্রেইট প্রজাতির সাপের দেখা মেলে। সাড়ে চার থেকে পাঁচ ফুট লম্বা হয় এই প্রজাতির সাপ। চকচকে ডোরাকাটা শরীর হয়। হালকা খয়েরি রঙের দেহ এবং পেটের কাছের রং হলুদ হয়। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সূঁচের মতো সরু দাঁত হয় ওয়ালস ক্রেট। নিশ্চুপে ছোবল মারে এই প্রজাতির সাপ। যাকে ছোবল মারবে, তিনি প্রথমে সেটি টেরও পাবেন না। কোনও যন্ত্রণাও হবে না। স্নায়ুতন্ত্র বিকল হয়ে মারা যেতে পারেন কয়েক মিনিটের মধ্যে। এমনকী ঘুমের মধ্যেও মৃত্যু হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়াল’স ক্রেট একটি প্রাণঘাতী নিউরোটক্সিক বিষধর সাপ। এর বিষ স্নায়ুতন্ত্রে আঘাত হেনে দ্রুত মৃত্যুর কারণ হতে পারে। কমন ক্রেটের তুলনায় ওয়ালস ক্রেট তুলনামূলক আরও বেশি বিষধর। সাধারণত মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে এদের বংশবৃদ্ধি হয়। একবারে ২২টি ডিম পাড়তে পারে ওয়ালস ক্রেট।