• 'রাত বারোটায় বেরোলে হেনস্থা হবেই'! রাস্তায় বেওয়ারিশ কুকুর খাওয়ান নিয়ে মহিলাকে চরম হেনস্থা পুলিশ অফিসারের, বিস্ফোরক মন্তব্য 
    আজকাল | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  •  

    আজকাল ওয়েবডেস্ক: চেন্নাইয়ে সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা৷ চেন্নাইয়ের থিরুভানমিয়ুর এলাকায় এক পুলিশকর্মী ও এক মহিলার মধ্যে সংঘর্ষ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই মহিলা গত কুড়ি বছর ধরে নিয়মিতভাবে রাস্তার কুকুরদের খাওয়াচ্ছিলেন। কিছুদিন আগে একদিন পুলিশের এক অফিসার তাঁকে এভাবে পথ কুকুরদের খাওয়ানো বন্ধ করতে বলেন। তারপরই ঘটে বিপত্তি। খবর অনুযায়ী ওই পুলিশ অফিসারের নাম কার্তিক। এই পুরো ঘটনা একটি  ভিডিওতে ধরা পড়ে এবং তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

    ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পুলিশ অফিসার কার্তিক দাবি করছেন, কুকুরদের খাওয়ানো বন্ধ করে দিলে তারা 'নিজে থেকেই চলে যাবে।' এর প্রেক্ষিতে মহিলা পাল্টা যুক্তি দেন, তিনি কুকুরদের খাওয়ান কারণ প্রশাসন যথাযথভাবে কুকুরদের বন্ধ্যাকরণ (স্টেরিলাইজেশন) কর্মসূচি পালন করেনি, যা ‘অ্যানিমাল বার্থ কন্ট্রোল’ (Animal Birth Control) আইনে নির্ধারিত। তিনি বলেন, এই ব্যর্থতার কারণেই এলাকায় কুকুরের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। শুধু তাই নয় কিছু কুকুরকে ইচ্ছাকৃতভাবে সমুদ্রতটে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

    এহেন দুজনের সংঘর্ষের সময় মহিলা জানান, তাঁর মাসি কে এই কারণেই চলতি বছরের মে মাসে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল। উত্তরে পুলিশ অফিসার কার্তিক বলেন, 'রাত বারোটায় যদি সমুদ্রতটে হাঁটেন, হেনস্থা তো হবেই। যদি কুকুর খাওয়াতে আসেন, তাহলে আপনাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হবে।' পরে কার্তিক দাবি করেন, তিনি বলতে চেয়েছিলেন যে, রাত বারোটার পরে রাস্তায় পাওয়া গেলে মহিলাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে।

    এই ঘটনার পর এখনও পর্যন্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে নাগরিক সমাজের একাংশ পুলিশের এই মন্তব্যকে ‘ভিকটিম ব্লেমিং’ (ভুক্তভোগীকেই দোষারোপ) হিসেবে দেখছেন এবং ঘটনার জেরে তাঁর তীব্র নিন্দা করছেন।

    ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের একটি সাম্প্রতিক রায়ও আলোচনায় উঠে এসেছে। দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে টিকা দেওয়া রাস্তার বেওয়ারিশ কুকুরদের স্থায়ীভাবে শেল্টারে রাখার ঠিক আগের আদেশকে সুপ্রিম কোর্ট 'অত্যন্ত কঠোর' বলে উল্লেখ করে তা বাতিল করা হয়েছে। 

    আদালত বলেছে, কুকুরদের বন্ধ্যাকরণ এবং টিকাকরণের পর মুক্ত করা যেতে পারে। তবে এখানে একটা 'কিন্তু' আছে। যে সমস্ত পথ কুকুর আক্রমণাত্মক বা র‍্যাবিসে আক্রান্ত, তাদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হবে। একই সঙ্গে আদালত জনসমক্ষে কুকুর খাওয়ানো নিয়েও সতর্কবার্তা দিয়েছে।সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এহেনে ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই ফের এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে৷ অনেকেই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে নানারকম মন্তব্য করছেন। দ্রুত এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
  • Link to this news (আজকাল)