• অনুরাগের হনুমান তত্ত্ব ‘ভ্রান্তবিজ্ঞান’, সমালোচনায় বিজ্ঞানমনস্করা
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ঘর ভর্তি স্কুলপড়ুয়া। বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর জিজ্ঞেস করলেন, প্রথম মহাকাশে কে গিয়েছিলেন? শিশুরা কুইজের ভঙ্গিতে উত্তর দিল ‘নিল আর্মস্ট্রং!’ প্রথম মহাকাশচারী সোভিয়েত দেশের ইউরি গ্যাগারিনের নাম উচ্চারণ তো দূরের, অনুরাগ বললেন, ‘আমার তো মনে হয় হনুমানজি!’ ঘরজুড়ে শিশুমন একেবারে নিশ্চুপ। দেশের ইসরো যখন পৃথিবীর মানচিত্রে জায়গা করে নিচ্ছে সেইসময় কেন্দ্রের শাসক দলের সাংসদের এমন মন্তব্যে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞানমনস্করা সাংসদের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা বলছেন, ভ্রান্তবিজ্ঞানের চাষ শুরু হয়েছে।

    প্রখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী দেবীপ্রসাদ দুয়ারী বলছিলেন, ‘এটুকুই বলতে পারি, পড়ুয়ারা এখন অনেক বেশি জানে আর সঠিক জানে। তাদের হাতের কাছে ইন্টারনেট রয়েছে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, ইউটিউব দেখে তারা সারাক্ষণ চর্চা করছে।’ বিজ্ঞানকর্মী-বিজ্ঞানমনস্করা অনুরাগের এই ব্যখ্যাকে তীব্র ভাষায় নিন্দা করেছেন। ইসরোর ডিরেক্টর ভি নারায়ণন ২০৪৭ সাল পর্যন্ত মহাকাশ গবেষণার রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। বিজ্ঞানকর্মীরা মনে করছেন, পৃথিবীর মানুষ দেখেছেন বিজ্ঞান গবেষণায় ভারত নিজেকে কোন স্তরে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে বিজেপি সাংসদের এমন মন্তব্য অনভিপ্রেত। 

    পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সম্পাদক সৌরভ চক্রবর্তী বলছিলেন, ‘এমন মন্তব্যে ভারতবাসীর মাথা হেঁট হল। শুধু অনুরাগ নন, বিভিন্ন সময়ে গেরুয়া শিবিরের আরও অনেকেই এমন মন্তব্য করেছেন। ধর্মীয়, জাতপাতের ভাগকে একমাত্র মিলিয়ে দিতে পারে বিজ্ঞানমনস্কতা। এর মাধ্যমেই আমরা প্রগতির পথে হাঁটব। তার ফলেই সমাজে শ্রেণিবৈষম্য মিটবে। স্বাধীনতার পর ভারত বিজ্ঞানকে সামনে রেখেই জাতিগঠনের কথা বলেছে। আমাদের দেশে বিজ্ঞান গবেষণার উপ জোর দেওয়া হয়েছে। এখন আবার অপবিজ্ঞান এনে বিজ্ঞান-যুক্তিবাদকে পিছনে ফেলে দিচ্ছে।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)