ফের প্রকাশিত আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের হারিয়ে যাওয়া জন্মশতবর্ষ স্মরণিকা
বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘রবীন্দ্রনাথ কবি। আমি রাসায়নিক হইলেও অরসিক। আমার সহিত পরিচয় তাঁর রসলোকের নয়, তাঁহার ব্যক্তিত্বের।’ রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে লিখছেন বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়। আচার্য নিজের জয়কীর্তি নিজে স্থাপন করেছেন উ্যদমশীল জীবনের ক্ষেত্রে, পাথর নিয়ে নয়, প্রেম দিয়ে।’ প্রফুল্লচন্দ্রকে নিয়ে লিখছেন রবীন্দ্রনাথ।
বাঙালির সাংস্কৃতিক ইতিহাসে ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দ একটি অবিস্মরণীয় বছর হিসেবে বিবেচিত হয়। সে বছর জন্মগ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়, নীলরতন সরকার, ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় প্রমুখ মণীষীরা। একশোবছর পর শতবর্ষ উদযাপনে ১৯৬১ সালে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের গুণমুগ্ধরা ‘খুলনা সম্মিলনী’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেছিলেন। ১৯৬১ সালে বিজ্ঞানীর জন্মশতবর্ষে ‘আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র জন্মশতবর্ষ পূর্তি স্মারকগ্রন্থ’ প্রকাশ করেন তাঁরা। ৬৫ বছর পর সে গ্রন্থ আর কোথাও পাওয়া যায় না। সংগঠনটিরও কোনও অস্তিত্ব নেই। তবে ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে সেই গ্রন্থটিকে পুনরুদ্ধার করেছে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র সম্মিলনী। সেই পুনর্মুদ্রিত স্মারকগ্রন্থে রয়েছে প্রফুল্লকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথের আর রবীন্দ্রকে নিয়ে প্রফুল্লের কিছু বিরল লেখা। সঙ্গে কিছু দুষ্প্রাপ্য ছবি। অন্য মণীষীদের লেখা। প্রথম স্মারকগ্রন্থের প্রচ্ছদটি পাওয়া যায়নি। সেটি ছাড়া বাদবাকি পুরো অংশ পুনরায় ছাপা হয়েছে। বুধবার বিকেলে বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়ামে (বিআইটিএম) বইটি প্রকাশ হয়। উপস্থিত ছিলেন বিআইটিএমে’র ডিরেক্টর অর্ণব চট্টোপাধ্যায়, অধ্যাপক মানস চক্রবর্তী, মানসপ্রতীম দাস প্রমুখ। পড়ুয়াদের সামনে মানস চক্রবর্তী ও মানসপ্রতীম দাস সহজ ভাষায় আচার্যর জীবনী তুলে ধরেন।
দুষ্প্রাপ্য এই স্মারকগ্রন্থটি শুরু হচ্ছে ভারতের তত্কালীন রাষ্ট্রপতি এস রাধাকৃষ্ণণের লেখা দিয়ে। তারপর রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের মধ্যে পত্র বিনিময়ের সংকলন। সেখানে তত্কালীন রাজনৈতিক-আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে দু’জনের মধ্যে আলোচনার নিদর্শন পাওয়া যায়। আচার্যকে নিয়ে এই সংকলনে সত্যেন্দ্রনাথ বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ একাধিক বিশিষ্টর লেখা রয়েছে। সে সময় প্রফুল্লচন্দ্রর তরুণ বয়স। তখন প্রথম বিদেশে যাচ্ছেন। সে সময়ের ছবি সহ একাধিক দুষ্প্রাপ্য ছবি আছে বইটিতে।
আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক পিনাকপানী দত্ত বলেন, ‘১৯৬১ সালে প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের জন্ম শতবর্ষে দু’টি স্মরণিকা প্রকাশিত হয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছিল এই খুলনা সম্মিলনীর দ্বারা প্রকাশিত। এই সংগঠনের কেউ এখন আর বেঁচে নেই। বহু বিখ্যাত মানুষের লেখা এই বইটিতে রয়েছে। আমরা আজ এটি সাধারণের জন্য প্রকাশ করতে পারলাম।’-নিজস্ব চিত্র