• ফাঁসির সাজাপ্রাপ্তকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ হাইকোর্টের, খানাকুলের ঘটনা, তন্ত্রসাধনার জন্য শিশুকন্যা খুন
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: তন্ত্রসাধনার জন্য নাতনিকে তান্ত্রিকের হাতে তুলে দিয়েছিলেন দিদিমা। পরে হাতে-পায়ে গামছা বাঁধা অবস্থায় ৪ বছর ৩ মাসের সেই শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার হয় এলাকারই একটি নির্মীয়মান বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে। সেই মামলায় অভিযুক্ত তান্ত্রিকের স্ত্রীকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিল নিম্ন আদালত। সেই সঙ্গে খুন হওয়া শিশুর দিদিমাকে যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বুধবার দুই সাজাপ্রাপ্তকেই বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

    ২০১৮ সালে ২ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। অভিযোগ, হুগলির খানাকুলের রাধাবল্লভপুর এলাকার এক শিশুকন্যাকে তার দিদা মুরারি পণ্ডিত নামে এক প্রতিবেশীর হাতে তুলে দিয়েছিল তন্ত্রসাধনার জন্য। অভিযোগ ওঠে, ওই তান্ত্রিক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে খুন করে। তারপর পাশের একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে তার দেহ লোপাট করে। সেই ঘটনায় মুরারিকে সাহায্য করেছিল তার স্ত্রী সাগরিকা পণ্ডিত।

    শিশুর বাবা খানাকুল থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্ত শুরু করে খানাকুল থানার পুলিস। তারা মুরারি, সাগরিকা এবং ওই শিশুকন্যার দিদিমা সুশীলা মাঝিকে গ্রেপ্তার করে। বিচার চলাকালীন অভিযুক্ত মুরারি পণ্ডিতের মৃত্যু হয়। বাকি দু’জনের মধ্যে তান্ত্রিকের স্ত্রীকে ফাঁসির সাজা শোনায় আরামবাগ মহকুমার অতিরিক্ত দায়রা পকসো আদালতের বিচারক কিষাণ কুমার আগরওয়াল। দিদিমাকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দেন তিনি। 

    নিম্ন আদালতের ওই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত সাগরিকা এবং শিশুটির দিদিমা সুশীলা। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানিতে সাগরিকার হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী নীলাদ্রিশেখর ঘোষ। সওয়ালে তিনি দাবি করেন, পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সাজা ঘোষণা করেছে নিম্ন আদালত। এই ঘটনার কোনও প্রত্যক্ষদর্শী বা সাক্ষী নেই। রাজ্যের তরফে অবশ্য নিম্ন আদালতের নির্দেশকেই যথাযথ বলে দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু সব পক্ষের সওয়াল জবাব শেষে আদালত রায়ে জানায়, এই মামলায় তথ্যগত অসঙ্গতি রয়েছে। যে কারণে ‘বেনিফিট অফ ডাউট’ তত্ত্বে দুই সাজাপ্রাপ্তকেই বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।   
  • Link to this news (বর্তমান)