নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: প্রধান শিক্ষকের হাতের পাঞ্জা কেটে ফেলার পর তিনদিন পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও অভিযুক্ত নন্দ মুড়া কিংবা তার বাবা কেউই ধরা পড়েনি। মঙ্গলবার থানায় বিক্ষোভ হয়। সেখানে থানার ওসি শাহেনশা হক ২৪ ঘণ্টা সময় চেয়ে নেন। সেইমতো বুধবার থানায় কোনও কর্মসূচি রাখা হয়নি। কিন্তু, পুলিসের দেওয়া সময়সীমার মধ্যে অভিযুক্ত ধরা না পড়লে আন্দোলন চলবে বলে এসইউসি এবং বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। এদিকে, প্রধান শিক্ষক গোকুলচন্দ্র মুড়ার হাতের অবস্থা কেমন তা নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার খানিকটা জানা যাবে বলে পরিবার সূত্রে খবর।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ গোকুলচন্দ্রবাবুর ডান হাতে হাঁসুয়ার কোপ মেরে ছুটে পালায় নন্দ মুড়া। কিছুক্ষণ পর বাড়ি থেকে অদৃশ্য হয়ে যান তার বাবাও। নন্দের কাছে মোবাইল না থাকায় পুলিস ফাঁপরে পড়েছে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অবস্থান জানা যাচ্ছে না। এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। তার নিকট ও দূরের সব আত্মীয়ের বাড়িতে খোঁজখবর নিয়েছে পুলিস। কিন্তু তাকে পাওগা যায়নি। প্রতিবেশী ওড়িশায় গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে ঢুকে পড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। তাকে ধরতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে ভগবানপুর থানা।
স্থানীয়রা জানান, ভগবানপুর থানার দক্ষিণ কুলবেড়িয়া গ্রামে এক পুকুরের দু’ ধারে প্রধান শিক্ষক গোকুলচন্দ্র মুড়া ও হামলাকারী নন্দ মুড়ার বাড়ি। নন্দ পেশায় মাছ বিক্রেতা। প্রতিবেশী প্রধান শিক্ষকের নাবালিকা মেয়েকে ফুসলিয়ে পালানোর ঘটনায় সে জেল খেটেছে। ওই ঘটনায় তার বাবাও জেল খেটেছে। আর্থিক সংকটের জেরে চিকিৎসার অভাবে মায়ের মৃত্যু হয়। পুলিস নন্দের খপ্পর থেকে গোকুলচন্দ্রবাবুর মেয়েকে উদ্ধার করে হোমে পাঠিয়েছিল। গোকুলবাবু তাঁর ওই মেয়েকে একটি অজ্ঞাতস্থানে রেখেছেন। সম্প্রতি মামলা মোকদ্দমা নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে আবারও তিক্ততা বাড়ছিল। তারপরই প্রধান শিক্ষকের উপর হামলার করে নন্দ। জখম প্রধান শিক্ষক সাহিত্য চর্চা এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত। তাঁর উপর এই হামলায় অনেকেই নিন্দা করছেন। সেইসঙ্গে অভিযুক্তকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে আওয়াজ তুলছেন।
সোমবার গোকুলবাবু তালদা প্রাইমারি স্কুলে যাওয়ার সময় হামলা চালানো হয়। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবিতে পুলিসের উপর চাপ বাড়ছে। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য কমিটির সদস্য সতীশ সাউ বলেন, গোকুলচন্দ্রবাবুর উপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্তকে ধরার বিষয়ে পুলিস উদাসীন। তাকে ধরতে পুলিসের তৎপরতা লক্ষ্য করছি না। আমরা ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করব। তারপর এই ইস্যুতে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে। ভগবানপুর থানার ওসি বলেন, আমরা অভিযুক্ত যুবকের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছি। ভগবানপুর থানার দক্ষিণ কুলবেড়িয়া গ্রামে অভিযুক্তের বাড়ি। - নিজস্ব চিত্র