রাজ্যের উদ্যোগে ভোল বদলাচ্ছে গ্রামীণ চিকিৎসা পরিকাঠামোর
বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: রাজ্যের উদ্যোগে ভোল বদলে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের গ্রামীণ চিকিৎসা পরিকাঠামোর। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর ও দার্জিলিং পাহাড়ে কোথাও ১০ শয্যার নতুন হাসপাতাল, কোথাও আবার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ করেছে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গেও একাধিক জেলায় গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। দুই বর্ধমান জেলা সহ ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়াতেও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে যাতে রোগীরা দিন-রাত পরিষেবা পান, সেজন্য বাড়ানো হচ্ছে পরিকাঠামো।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, সবমিলিয়ে রাজ্যে ১৮টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নে বরাদ্দ হয়েছে ২৫ কোটি ৬৪ লক্ষ ৫৮ হাজার ৪৯২ টাকা। বেশিরভাগ জায়গাতেই শুরু হয়ে গিয়েছে কাজ।
বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে ১০ বেডের হাসপাতাল পেতে চলেছে জলপাইগুড়ির বোয়ালমারি নন্দনপুর। ১ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি হবে ১০ বেডের হাসপাতাল। ফলে ২৪ ঘণ্টাই চিকিৎসা পরিষেবা মিলবে। থাকবে নর্মাল ডেলিভারির পরিকাঠামো। এখন সেখানে শুধু আউটডোর চলে। একইসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলার চা বাগান অধ্যুষিত নাগরাকাটার ধূমপাড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির নয়া ভবন তৈরির অনুমোদনের পাশাপাশি বরাদ্দ মিলেছে। ফলে পুজোর আগে খুশির হাওয়া জলপাইগুড়িতে।
এদিকে, জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের অধীন সদর হাসপাতাল সংলগ্ন মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবে রোগীর পরিজনদের থাকার জন্য তৈরি হয়েছে নয়া প্রতীক্ষালয়। জলপাইগুড়ি সদরের বিধায়ক ডাঃ প্রদীপকুমার বর্মার এমএলএ ফান্ড থেকে ১৯ লক্ষ টাকায় তৈরি হয়েছে সেটি।
জলপাইগুড়ি সদরের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ প্রীতম বসু বলেন, বোয়ালমারি নন্দনপুরে ১০ বেডের হাসপাতাল তৈরির জন্য ১ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এটি হলে এলাকার মানুষের খুবই উপকার হবে। এছাড়াও রংধামালি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নয়া ভবন তৈরির জন্যও বরাদ্দ মিলেছে।
চা বাগান অধ্যুষিত বানারহাটে ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০ বেডের হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ধূপগুড়িতে হচ্ছে ১০০ বেডের হাসপাতাল। কাজ শুরুর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অঙ্কুশ চক্রবর্তী। ক্রান্তিতেও ৩০ বেডের হাসপাতাল তৈরির অনুমোদন মিলছে বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পঞ্চানন রায়।
জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ অসীম হালদার বলেন, রাজ্যের উদ্যোগে জেলার গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামো জোর দেওয়া হয়েছে। একাধিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন তৈরির জন্য বরাদ্দ দিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর। সঙ্গে কিছু হাসপাতাল তৈরির জন্য বরাদ্দ মিলেছে। দ্রুততার সঙ্গেই সব কাজ শেষ করা হবে।
কোচবিহার-১ ব্লকের চিল্কিরহাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। একইভাবে পরিকাঠামো বাড়ছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারির দৌলতপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। দার্জিলিংয়ে রংলিরংলিয়ট ব্লকে সিনরিংতাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নেও বরাদ্দ দিয়েছে রাজ্য। ঝাড়গ্রামের বিনপুরের দু’টি, পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা ও বারাবণীর দু’টি, পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর ও ভাতারের দু’টি এবং পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নে বরাদ্দ মিলেছে।