চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: নন্দীগ্রামে সমবায় ভোটে খাতা খুলতেই পারল না বিজেপি এবং সিপিএমের জোট শক্তি। ১২টি আসনের সবকয়টি আসনে জয়ী হল তৃণমূল কংগ্রেস। বুধবার নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লকের গড়চক্রবেড়িয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালন বোর্ড প্রতিনিধি ভোটে এই নিরঙ্কুশ জয়ে খুশির জোয়ার বইছে শাসক দলের শিবিরে । স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা এলাকায় এহেন পরাজয়ে হতাশ বিজেপি এবং সিপিএম শিবির। স্থানীয় বেশ কয়েকটি সমবায় ভোটে বিজেপি জয়ী হয়েছে। সেই চেনা ঘটনায় এবার ছন্দপতন ঘটল।
জানা গিয়েছে, এই সমবায় ভোটে বিজেপি এবং সিপিএমের জোট শক্তি ৯ টি আসনে লড়াই করেছিল। তৃণমূল ১২ আসনের প্রার্থী দিয়েছিল। স্বাভাবিকভাবে ভোটের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনটি আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস । বাকি ৯ টি আসনে ভোট হয়। সেই ৯ টি আসনে প্রত্যেকটিতে ১০ থেকে ১৫ টি করে ভোট পেয়েছে রাজ্যের শাসকদল বিরোধী জোট শক্তি। এই ভোটে শান্তি বজায় রাখতে সকাল থেকেই ছিল পুলিশের কড়া নিরাপত্তা। নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে ভোট গ্রহণ পর্ব।
এ বিষয়ে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পাল জানিয়েছেন, “আমরা এই সমবায় ভোটে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছি না । তবে শুনেছি তৃণমূল কংগ্রেস সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে গড়চক্রবেড়িয়া সমবায় ভোটে জিতেছে ।” অন্যদিকে বিজেপি-সিপিএমের জোট শক্তির পরাজয়কে নন্দীগ্রামে তৃণমূলের শক্তি বৃদ্ধির দৃষ্টান্ত বলে মনে করছে শাসক শিবির। শুধু তাই নয় আগামী দিনে নন্দীগ্রামে বহু মানুষ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলের হাত শক্ত করবে বলে তারা মনে করছেন।
জয়ের প্রসঙ্গ টেনে স্থানীয় কালীচরণপুর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি শেখ আলরাজি জানিয়েছেন,”বিজেপি মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বেশিদিন ধরে রাখতে পারবে না । বুধবার নন্দীগ্রামের গড়চক্রবেড়িয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোটে তৃণমূলের নিরঙ্কুশ জয়, সেটাই প্রমাণ করেছে। এখানে ধর্মের রাজনীতি পছন্দ করেন না মানুষজন। নন্দীগ্রামে ফের তা প্রমাণ হল। সিপিএমকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি এই সমবায় ভোট বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তৃণমূলের জনসমর্থন পুষ্ট ঝড়ে সেই অশুভ আঁতাত খাবি খেয়েছে। ধরাশায়ী হয়েছে।”
দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে এই সমবায় পরিচালন বোর্ড দখল করে রয়েছে রাজ্যের শাসক দলের প্রতিনিধিরা । বুধবার জয়ের সুবাদে আগামী পাঁচ বছর ফের এই সমবায় তারা পরিচালনার ক্ষমতা অর্জন করল। আগামী দিনে সমবায়ের সমৃদ্ধির কথা ভেবে বেশ কিছু উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা রূপায়িত হবে বলে জানা গিয়েছে।