দুর্গাপুজোর অনুদান সংক্রান্ত মামলায় কড়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ, যে সব পুজো কমিটির খরচের হিসাব দেয়নি তারা আর সরকারি অনুদান পাবে না। বুধবার বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে-এর ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়েছে, আগের নির্দেশ মেনে যেসব কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হিসাব জমা দিয়েছে, শুধু তাদেরই অনুদান দেওয়া হবে। অন্যদের দেওয়া হবে না।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে রিপোর্ট পেশ করে জানান, ৪১,৭৯৯টি পুজো কমিটির মধ্যে মাত্র তিনটি কমিটি খরচের হিসাব জমা দেয়নি। এরা সবাই শিলিগুড়ির কমিটি। এ বিষয়ে বিচারপতি পালের মন্তব্য, সংখ্যাটা এতই কম যে ‘মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজে দেখতে হবে’। তবে মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য প্রশ্ন তুলে বলেন, অনুমোদিত সময়সীমার মধ্যে খরচের হিসাব জমা দেওয়া হয়নি। কলকাতা পুলিশের কাছেও এ বিষয়ে তথ্য নেই। এজির বক্তব্য, ২০২৪ সালে কলকাতার ২,৮৭৬টি কমিটি সময়মতো হিসাব জমা দেওয়ায় তাদের অনুদান দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্ট আরও জানিয়েছে, সরকারি অনুদান দেওয়ার আগে পুজো কমিটির খরচের হিসাব প্রয়োজন। বছরের পর বছর, অনেক কমিটি এই হিসাব জমা দিত না যার কারণে অর্থের অপব্যবহার হতে পারত। আদালতের নির্দেশে পুজো কমিটিগুলিকে পুজোর ছুটির এক মাসের মধ্যে খরচের রিপোর্ট রাজ্যে জমা দিতে হবে।
উল্লেখ্য, দুর্গাপুজো কমিটিকে অনুদান দেওয়ার নিয়ম মেনে চলা নিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। মামলাকারী অভিযোগ করেছিলেন, সরকারি অর্থের অপব্যবহার হচ্ছে। রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, এই টাকা জনগণের স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুলিশি সচেতনতামূলক কার্যক্রম, ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রচারণা, কোভিড বিধিনিষেধের কারণে অতিরিক্ত খরচ এই সবের ব্যাখ্যা রাজ্য ইতিমধ্যেই আদালতে পেশ করেছে। হাইকোর্টের নির্দেশে এবার স্পষ্ট হয়ে গেল, যেসব কমিটি সরকারি অর্থ ব্যবহার করছে, তাদেরকে নিয়ম মেনে হিসাব জমা দিতে হবে। অন্যথায় আর অনুদান পাওয়া যাবে না।