চিংড়িঘাটার যানজট কমাতে নিউ টাউন থেকে শহরে আসার বিকল্প পথের ভাবনা
আনন্দবাজার | ২৭ আগস্ট ২০২৫
চিংড়িঘাটা মোড়ের যানজট থেকে সাধারণ মানুষকে রেহাই দিতে বিকল্প রাস্তায় গাড়ি চলাচল করানোর পরিকল্পনা শুরু করেছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ ঠিক করেছে, নিউ টাউন থেকে আসা গাড়িগুলির একটি অংশকে নিক্কো পার্ক দিয়ে চিংড়িঘাটা মোড়ে না পাঠিয়ে বিকল্প পথে ভাঙড় দিয়ে পাঠানো হতে পারে। তার জন্য একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে কথাও বলেছে পুলিশ। যাতে তাদের কর্মীদের ব্যবহারের কয়েকশো গাড়ি ওই বিকল্প পথে নিউ টাউন থেকে শহরে ঢোকে। ইতিমধ্যে ওই বিকল্প রাস্তা নিয়ে বিধাননগর এবং কলকাতা পুলিশ নিজেদের মধ্যে আলোচনাও করেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে, নিউ টাউনের বিশ্ব বাংলা গেট থেকে ওই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার গাড়িগুলিকে নিউ টাউন সিক্স লেন হয়ে হাতিশালা দিয়ে ভাঙড়ের শিখরপুর রোডে পাঠানো হবে। সেখান থেকে শিখরপুর রোড দিয়ে গাড়িগুলি ভোজেরহাট হয়ে বাসন্তী হাইওয়ে ধরে ই এম বাইপাসে পৌঁছবে। তার মধ্যে গড়িয়ার দিকের গাড়ি চৌবাগা দিয়ে আনন্দপুর এবং কালিকাপুর হয়ে ই এম বাইপাসে পৌঁছবে।
এক পুলিশকর্তা জানান, হিসাব করে দেখা গিয়েছে, ওই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কয়েকশো গাড়ি অফিসের ব্যস্ত সময়ে যাতায়াত করে চিংড়িঘাটা হয়ে। এ ছাড়া, সেখানকার কর্মীরা যে শাটল গাড়ি ব্যবহার করেন, তা-ও চিংড়িঘাটা হয়ে যায়। তাইপ্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ওই সব গাড়ি যদি নিউ টাউনের সিক্স লেন দিয়ে ভাঙড় হয়ে বাসন্তী হাইওয়ে দিয়ে শহরে প্রবেশ করে, তা হলে চিংড়িঘাটা মোড়ে যানজটের কিছুটা সুরাহা হতে পারে। তবে, ওইসংস্থার গাড়ি বিকল্প পথ ধরলেও শাটল গাড়ি সেই পথে আসবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে পুলিশের একাংশের মধ্যেই। কারণ হিসাবে তাঁরা বলছেন, বিশ্ব বাংলা গেট থেকে নিউ টাউন, নিক্কো পার্ক হয়ে চিংড়িঘাটা মোড় প্রায় ১৫ কিলোমিটার। কিন্তু বিকল্প পথে ভাঙড় এবং বাসন্তী হাইওয়ে হয়ে এলে অতিরিক্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে গাড়িগুলিকে। বিকল্প ওই পথে সিগন্যাল বা গাড়ির চাপ তেমন না থাকলেও শিখরপুর রোড বেশি চওড়া নয়। প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার লম্বা দুই লেনের ওই রাস্তায় কোনও আলো নেই। পাশাপাশি, সেটি এখন খানাখন্দে ভরা। পঞ্চায়েত এলাকার অধীন ওই রাস্তা মেরামত না করলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকবে বলে পুলিশের একাংশের মত। উল্লেখ্য, ওই রাস্তায় চলতি বছর একাধিক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে গাড়ি। মৃত্যু হয়েছে একাধিক জনের।
লালবাজারের একটি অংশ জানিয়েছে, চিংড়িঘাটা মোড়ের যানজট কমাতে বিধাননগর এবং কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগ আলোচনা করেছে। সেখানেই ওই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে তাদের গাড়ি বিকল্প পথ দিয়ে পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যার ভিত্তিতে সিক্স লেন-সহ কয়েকটি রাস্তার পরিকাঠামো ঠিক করার জন্য এনকেডিএ-কে বলা হয়েছে। ওই পরিকাঠামো ঠিক হলে বিকল্প রাস্তা দিয়ে নিউ টাউনের বড় অংশের গাড়ি শহরে ঢুকবে বলে পুলিশের আশা।
পুলিশ জানিয়েছে, এর সঙ্গেই চিংড়িঘাটা মোড় সম্প্রসারণ করার চেষ্টা চলছে। তার জন্য চিংড়িঘাটা মোড়ে থাকা পাঁচটি বাড়ি এবং দোকানকে পুনর্বাসনদেওয়ার কথা রয়েছে সরকারের তরফে।
ট্র্যাফিক পুলিশের আশা, ওই বিকল্প রাস্তা দিয়ে গাড়ি গেলে এবং দোকান সরিয়ে চিংড়িঘাটা মোড়ের রাস্তা চওড়া করা হলে সেখানে যানজটের কবল থেকে মুক্তি পাবেন সাধারণ মানুষ।