• হাওড়ায় সরকারি শিবিরের টাকা নিয়ে জটিলতা
    আনন্দবাজার | ২৭ আগস্ট ২০২৫
  • হাতে টাকা নেই, অথচ অথচ সরকারের নির্দেশে ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচি করার নির্দেশ। এই দু’য়ের মাঝে পড়ে নাস্তানবুদ হাওড়ার বেশ কয়েকটি ব্লক। জেলা প্রশাসনের তরফে এই শিবিরের আয়োজন করার জন্য এখনও পর্যন্ত কোনও টাকা দেওয়া হয়নি। অনেক ব্লক প্রশাসনের দাবি, এই পরিস্থিতিতে টাকার জোগাড় করতে গিয়ে ধার পর্যন্ত করতে হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তার অবশ্য দাবি, ‘‘এর আগে ‘দুয়ারে সরকার’-এর শিবির আয়োজনের টাকা পঞ্চায়েতগুলিকে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ বারও খরচ সরকার দিয়ে দেবে।’’

    জেলা প্রশাসনের এই দাবিতে অবশ্য আশ্বস্ত হননি বহু পঞ্চায়েত কর্তা। তাঁরা জানান, দুয়ারে সরকারের শিবিরের টাকা পঞ্চায়েতগুলি পেয়েছিল অনেক দেরিতে। তা ছাড়া, যে টাকা পাওয়া গিয়েছিল তা যৎসামান্য। খরচের তুলনায় অনেক কম। এ বারও তা ঘটবে বলে অধিকাংশ পঞ্চায়েত কর্তার আশঙ্কা।

    ব্লকের আধিকারিকেরা জানান, বেশিরভাগ শিবির করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েতকে। কিছু শিবির হচ্ছে পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে। কিন্তু কোন খরচ কোথা থেকে আসবে তার কোনও দিশা দেওয়া হয়নি। অন্য দিকে, যে সব গ্রাম পঞ্চায়েত শিবিরের দায়িত্ব পেয়েছে তা করতে গিয়ে তাদের অধিকাংশের নিজস্ব তহবিল তলানিতে ঠেকছে বলে ওই সব পঞ্চায়েত সূত্রের খবর।

    এ বারও ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির সঙ্গে হচ্ছে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরও। জোড়া কর্মসূচির শিবিরের জন্য খরচও বেশি হচ্ছে। মাইক প্রচার, বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট ব্যবস্থা, শিবিরের আধিকারিক ও কর্মীদের জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা, ভিআইপিদের আপ্যায়ণ ও বরণ সব মিলিয়ে এক একটি শিবিরের জন্য গড়ে খরচ হচ্ছে পঞ্চাশ থেকে ষাট হাজার টাকা করে।

    বাগনান ২ ব্লকের একটি পঞ্চায়েতে আটটি শিবির হওয়ার কথা। তার মধ্যে তিনটি হয়ে গিয়েছে। একটি পঞ্চায়েত প্রধানের বক্তব্য, ‘‘হিসেব করে দেখেছি শিবির করতে গিয়ে সাড়ে তিন-চার লক্ষ টাকা খরচ হবে। আমাদের নিজস্ব তহবিলে এত টাকা নেই। তাই ধার করে শিবির করতে হবে। কবে টাকা পাব, আদৌ পাব কিনা জানি না।’’

    অন্য একটি ব্লকের এক পঞ্চায়েত সমিতির এক পদাধিকারীর কথায়, ‘‘আমাদের নিজস্ব তহবিল এমনিতেই কম। তাও মনে হয় শেষ হয়ে যাবে শিবির করতে। অথচ, ওই টাকাতেই তো অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করি আমরা। এ বার তা আর করাযাবে না।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)