• গঙ্গার পাড় রক্ষায় ম্যানগ্রোভ বসানোর প্রস্তাব
    বর্তমান | ২৭ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: উত্তর বারাকপুর পুরসভা এলাকায় গঙ্গা বাঁক নেওয়ায় ক্রমে ওই এলাকা বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। নবাবগঞ্জ, মণিরামপুর থেকে শুরু করে একেবারে গান্ধীঘাট পর্যন্ত গঙ্গার পাড় ভাঙছে। এমনকী বিপদে পড়তে চলেছে মঙ্গল পান্ডে পার্কও। বারাকপুরের জনৈক বাসিন্দা তাপস ভগত মঙ্গল পান্ডে পার্কের সয়েল টেস্ট করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ম্যানগ্রোভ বসানোর প্রস্তাব দিয়েছেন বারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডকে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সুন্দরবনকে যেভাবে ম্যানগ্রোভ বাঁচিয়ে রেখেছে, সেভাবেই গঙ্গার ধারে যদি ম্যানগ্রোভ বসানো যায়, তাহলেই গঙ্গার পাড় বাঁচানো সম্ভব। গার্ডওয়াল করলে লাভ হবে না। জলের তোড়ে তা পরে ভেঙে যাবে। তবে সেই প্রস্তাব অবশ্য ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে আছে। 

    বারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ছয় কিলোমিটার গঙ্গার পাড় রয়েছে। আর উত্তর বারাকপুর পুরসভা এলাকায় রয়েছে ১০ কিলোমিটার। পুরো এলাকাটাই ক্রমে বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এখানে ফেরিঘাটগুলি যেমন সমস্যায় পড়ছে, তেমনি দীর্ঘদিনের প্রাচীন জনপদ নবাবগঞ্জও বিপদের মুখে। এ ব্যাপারে তাপস ভগত বলেন, আমরা সয়েল টেস্ট করেছিলাম। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, গঙ্গার ধারে ম্যানগ্রোভ প্লান্টেশন করতে হবে। সেইমতো প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাব কার্যকর হয়নি। ম্যানগ্রোভই গঙ্গার পাড়কে বাঁচাতে পারে। না হলে জোয়ারের সময় যেভাবে জল বেড়ে যাচ্ছে, তাতে বিশেষত এই বর্ষাকালে, অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। 

    ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ধরনের কোনও প্রস্তাব দিল্লি থেকে অনুমোদন পায়নি। তবে ক্যান্টনমেন্ট এলাকাটা বাদ দিয়ে, সিপি বাংলো থেকে মণিরামপুর পর্যন্ত গার্ডওয়াল দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সেচদপ্তর। তার জন্য টাকাও বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ছ’ কিলোমিটার গঙ্গার ধার অরক্ষিত অবস্থাতেই থাকছে। জলের স্রোতে তা ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।

    উত্তর বারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় ঘোষও গঙ্গার ভাঙন নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, নবাবগঞ্জ এলাকার বড় অংশ আগামী দিন জলের তলায় চলে যাবে। অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। উত্তর বারাকপুর পুরসভা এলাকাতেই গঙ্গা টার্ন নেওয়ায় জলের স্রোতও বেশি। ম্যানগ্রোভ বসানোর প্রস্তাব ভালো। এটা পরীক্ষামূলকভাবে করা যেতে পারে। তবে এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারকে অবিলম্বে এগিয়ে আসা উচিত। গঙ্গার ধার বাঁচানো না গেলে অনেক প্রাচীন জনপদ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইতিমধ্যে দুটি পার্ক জলের স্রোতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আমরা তা বন্ধ করে দিয়েছি। আগামী দিন বর্ষার সময় ফেরিঘাট ও গঙ্গার ঘাটগুলি বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমি পরিবহণ দপ্তরকে চিঠি দিয়েছি। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও আবেদন করছি অবিলম্বে উদ্যোগী হওয়ার জন্য।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)