• শীঘ্রই সংস্কার হবে কাঁকসার এগারো মাইল থেকে দেউল যাওয়ার রাস্তা, খুশি বাসিন্দারা
    বর্তমান | ২৭ আগস্ট ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানকর: কাঁকসার এগারো মাইল থেকে দেউল যাওয়ার রাস্তার সংস্কার হতে চলেছে। ফলে দেউল পার্ক, শ্যামরূপা মন্দিরে এবার ভিড় বাড়বে বলে স্থানীয়রা আশা করছেন। কাঁকসা ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার বর্ধমানের সভামঞ্চ থেকে এই রাস্তা সংস্কারের কথা ঘোষণা করেছেন। সূত্রের খবর, প্রথম ধাপে এগারো মাইল থেকে বনগ্রাম পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার হবে। তাতে ৩২ লক্ষ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে বনগ্রাম থেকে কৃষ্ণপুর পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার রাস্তার কাজ হবে। তাতে ২৭ লক্ষ টাকা ধার্য করা হয়েছে।

    পানাগড়-মোড়গ্রাম জাতীয় সড়কের উপর রয়েছে এগারো মাইল মোড়। সেখান থেকে অযোধ্যা উচ্চবিদ্যালয়ের সুদৃশ্য তোরণ পেরিয়ে এগলেই ইছাই ঘোষের প্রতিষ্ঠিত দেউল নজরে আসবে। স্থানীয়রা জানান, বছরের সব সময়ই এখানে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। দুর্গাপুর এবং কাঁকসার এগারো মাইল হয়ে দু’টি রাস্তা দিয়ে শ্যামরূপা যাওয়া যায়। শ্যামরূপা মোড় অর্থাৎ মুচিপাড়া-শিবপুর পিডব্লুডি রোড থেকে শ্যামরূপা মন্দিরের দূরত্ব প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। ওই মন্দির থেকে দেউল পার্ক পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। প্লেভার ব্লক দিয়ে ওই রাস্তার আমূল সংস্কার হবে। কিন্তু এগারো মাইলের দিক থেকে আসার রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল ছিল। এখন এই রাস্তাটি সংস্কারের খবরে খুশির হাওয়া এলাকায়।

    অযোধ্যার বাসিন্দা আনন্দ চক্রবর্তী বলেন, কথিত আছে, লক্ষণ সেনের আমলে এখানে একজন কাপালিক নরবলি দিয়ে মায়ের সাধনা করতেন। কবি জয়দেব এসে নরবলি বন্ধের জন্য কাপালিককে অনুরোধ করেন। কিন্তু কাপালিক সেই অনুরোধ না রাখলে জয়দেব নিজের ভক্তিবলে মায়ের মুখ কৃষ্ণ করে দেন। শ্যামরূপে মা কালীর দর্শন পান কাপালিক। দেবীর নাম হয় শ্যামরূপা। এই নামটিও কবি জয়দেবেরই দেওয়া। কথিত রয়েছে, অবিভক্ত বাংলার প্রথম দুর্গাপুজো এখানেই হয়।

    শ্যামরূপা মন্দির থেকে কিছুটা এগিয়ে গেলে পড়বে ইছাই ঘোষের দেউল। বলা হয়, গোপ বংশের রাজা ইছাই ঘোষ এই দেউলটি নির্মাণ করেছিলেন। বর্তমানে দেউলটি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের অধীনে রয়েছে।

    স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এই রাস্তাটি এগারো মাইল থেকে কৃষ্ণপুরে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে রাস্তা বেহাল হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় গর্ত তৈরি হয়েছে। পিচ উঠে গিয়ে পাথর বের হয়ে গিয়েছে। বেহাল রাস্তার কারণে অযোধ্যা, বনকাটি, শ্যামবাজার, সাতকাহনিয়া, বনগ্রাম সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা অসুবিধায় পড়ছেন। 

    স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, রাস্তার মাঝে অনেক জায়গায় গর্ত তৈরি হয়েছে। গর্ত এড়াতে গিয়ে দু’দিক থেকে আসা সাইকেল, বাইক, গাড়িগুলি প্রায়ই মুখোমুখি হয়ে যাচ্ছে। বনকাটি পঞ্চায়েতের সদস্য গোবিন্দ বিশ্বাস, প্রভাত চন্দ বলেন, রাস্তা সংস্কার হবে। স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকরাও উপকৃত হবেন। পর্যটকদের ভিড় বাড়লে এলাকার অর্থনীতিতেও সুপ্রভাব পড়বে।
  • Link to this news (বর্তমান)