কুপ্রস্তাব না মানায় বউমাকে খুন শ্বশুরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
বর্তমান | ২৭ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বউমাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুনের দায়ে শ্বশুরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আসানসোল আদালত। দীর্ঘ শুনানি পর্ব শেষে মঙ্গলবার শ্বশুর শঙ্কর ঘোড়ুইয়ের সাজা ঘোষণা করেন বিচারক মহুয়া বসু রায়। ২০০৫ সালের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচারপর্ব এতদিনে শেষ হল। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি দোষীকে ২০হাজার টাকা জরিমানাও করেছেন বিচারক।
আদালতে সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালে জামুড়িয়া থানার কুলডাঙা গ্রামের ওই যুবতীর বিয়ে হয় ওই থানারই চুরুলিয়ায়। অভিযোগ প্রথম থেকেই পণের জন্য বধূকে চাপ দেওয়া হতো। স্বামী ছিলেন মূক ও বধির। এই অবস্থায় অসহায় গৃহবধূকে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য কুপ্রস্তাব দিতে থাকে শঙ্কর। সেই বছরই ১৪আগস্ট শ্বশুরের ঘরের শৌচালয় থেকেই বধূর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পাশে পাওয়া যায় একটি বঁটি। হাসপাতালে মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে ওই গৃহবধূ শ্বশুরের বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাবের অভিযোগ করেছিলেন। বধূর বাবা শ্বশুর সহ শ্বশুরবাড়ির ছ’জনের বিরুদ্ধে জামুড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ছ’জনের মধ্যে পাঁচজনকে মুক্তি দেওয়া হয়। শঙ্করকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এদিন তার সাজা ঘোষণা হয়।
এদিন সরকারি আইনজীবী বিনয়ানন্দ চট্টোপাধ্যায় দোষী ব্যক্তির সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসির দাবি করেন। তিনি বলেন, শ্বশুরবাড়িতে কুড়ি বছরের যুবতী শ্বশুরকে নিজের বাবার মতোই মনে করতেন। সেই লোকই যদি কুপ্রস্তাব দেয়, খুন করে তাহলে মেয়েরা কোথায় নিরাপদ? কুঁড়ি অবস্থাতেই মেয়েটাকে শেষ করল। দোষী ব্যক্তি নিজের স্ত্রী ও সন্তানের কথা বিচার করে সাজা কমানোর আর্জি জানায়। অবশেষে বিচারক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনান।
সরকারি আইনজীবী বিনয়ানন্দবাবু বলেন, মৃতার স্বামী মূক ও বধির। তিনিও অভিযুক্ত ছিলেন। তাই শুনানি প্রক্রিয়ায় বিশেষ ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। তাই বিচার প্রক্রিয়ায় দেরি হয়েছে। এই মামলায় মোট ১৯জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।