সংবাদদাতা, দেওয়ানহাট: ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের লক্ষ্যে জেলা কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই কোচবিহারে গেরুয়া শিবিরের অন্দরের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা কমিটি ঘোষণার পর থেকে যেভাবে বিজেপির অন্দরে নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে, তাতে বিধানসভা ভোটে যে তার প্রভাব পড়তে পারে সেটা এখন থেকেই আঁচ করতে শুরু করেছেন বিজেপির অনেক নেতাই।
একুশের বিধানসভা ভোটের পর জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ভালো ফল করতে পারেনি পদ্মশিবির। আর লোকসভা ভোটে কোচবিহারে বিজেপি প্রার্থী হারার পর থেকেই গেরুয়া শিবিরের ভাঙন শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে সিতাই বিধানসভা উপনির্বাচনের পরাজয়ে জেলায় দলের সংগঠন আরও দুর্বল হতে শুরু করে। অনেক এলাকার নেতা-কর্মীরা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। এই অবস্থায় কিছুদিন আগেই কোচবিহারে পুরনো জেলা সভাপতিকে সরিয়ে নতুন জেলা সভাপতি করা হয় অভিজিৎ বর্মনকে। গত সপ্তাহে ৯১ জনের জেলা কমিটি ঘোষণা করেন বিজেপির নয়া জেলা সভাপতি। যা নিয়ে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে আসে। ফলে আগামী বিধানসভা ভোটে জেলায় নিজেদের জেতা আসনগুলি কতটা ধরে রাখতে পারবে তা নিয়েই সন্দিহান খোদ জেলা বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ।
নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা হওয়ার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যেই সমালোচনায় মুখর হয়েছেন কমিটিতে স্থান না পাওয়া যুব মোর্চার জেলা সভাপতি কুমার চন্দন নারায়ণ। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন— বিশ্রাম দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। দলের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব চিরকাল। একইভাবে মহিলা সংগঠনের জেলা সভানেত্রী অর্পিতা নারায়ণেরও নয়া কমিটিতে ঠাঁই হয়নি। তিনিও সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন— ভালোবাসা, টাকা, কাছের লোক, আজকের রাজনীতি। ভালোবাসার কাছে সব হার মানে।
তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, পঞ্চায়েত ভোট থেকে শুরু হয়েছিল। লোকসভা, বিধানসভা উপনির্বাচনের পর থেকে জেলায় বিজেপির সংগঠন বলে কিছু নেই। ছাব্বিশে ভোটের পর সেটাও আর থাকবে না। আমাদের লক্ষ্য এবার ৯-৯ করা।
বিজেপির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, দলে গোষ্ঠীকোন্দল বলে কিছু নাই। কেউ কেউ সাময়িক আবেগে কোথাও কিছু লিখে থাকতে পারেন। আমরা সবাই একই পরিবারের লোক। তৃণমূল দিবাস্বপ্ন দেখুক। ছাব্বিশের ভোটের রেজাল্টের পরই তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে যাবে।