• পানিট্যাঙ্কিতে বাড়ি তৈরি বাংলাদেশি স্কুল শিক্ষকের, স্বদেশি তরুণকেই দেখভালের দায়িত্ব! ধৃত
    বর্তমান | ২৭ আগস্ট ২০২৫
  • সংবাদদাতা, নকশালবাড়ি: বাংলাদেশের স্কুল শিক্ষক বাড়ি তৈরি করেছেন ভারতে। আর এখানে থেকে সেই বাড়ির দেখভাল করছিল বাংলাদেশেরই এক তরুণ। নাম বদল করে ভারতীয় নাগরিক হওয়ায় নথিপত্র বানিয়ে বসবাস করছিল সে। সোমবার ভারত-নেপাল সীমান্ত পানিট্যাঙ্কির গৌরসিংজোতে এক বাংলাদেশি যুবক গ্রেপ্তার হতেই এমন তথ্য সামনে এসেছে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতের নাম অরুণকান্তি রায়, বয়স উনিশ। 

    বছর তিনেক ধরে অরুণ গৌরসিংজোতে বসবাস করছিল। ইতিমধ্যেই সে আধারকার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, প্যানকার্ড তৈরি করে নেয়। তবে এতকিছুর পরও শেষরক্ষা হল না। এসএসবি’র জালে ধরা পড়ল সে। তাকে খড়িবাড়ি থানার পুলিসের হাতে তুলে দেন এসএসবি জওয়ানরা। পুলিস জানিয়েছে, ধৃত অরুণকান্তি রায় বাংলাদেশের লালমণিরহাটের বাসিন্দা। 

    সোমবার বিশেষ সূত্র মারফত খবর পেয়ে গ্রামে অভিযানে যায় এসএসবি’র ৪১ নম্বর ব্যাটালিয়ন। এরপর সন্দেহজনক ওই তরুণকে জেরা করতেই তার বাংলাদেশি নাগরিকত্বের হদিশ পায়। তার হেফাজত থেকে বাংলাদেশের পরিচয়পত্র সহ ভারতীয় ড্রাইভিং লাইসেন্স, আধারকার্ড ও প্যানকার্ড উদ্ধার করা হয়। ভারতীয় নথিতে তার নাম অর্ঘ্য বর্মন। অন্যদিকে, বাংলাদেশের পরিচয়পত্রে অরুণকান্তি রায়। তবে এখানেই শেষ নয়। পুলিসি জেরায় জানিয়েছে, যে বাড়িতে সে বসবাস করছিল সেই বাড়ির মালিক বাংলাদেশের বাসিন্দা। সেখানকার একটি স্কুলের শিক্ষক। এরপর তার হেফাজত থেকে ভবেশচন্দ্র বর্মন নামে ওই বাংলাদেশি শিক্ষকের ভারতীয় নথি বাজেয়াপ্ত করে পুলিস। শুধু ওই শিক্ষক নন, তাঁর পরিবারের বাকি সদস্যদেরও ভারতীয় নথি পাওয়া যায়। বাড়ি থেকে পুলিস ওই শিক্ষকের বাংলাদেশি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শংসাপত্র, ভারতীয় আধারকার্ড, ব্যাঙ্কের পাসবই, ভোটারকার্ড সহ ওই শিক্ষকের বউ ননীবালা বর্মন, মেয়ে ডিম্পল বর্মন ও ছেলে সৌরভ বর্মনের ভারতীয় আধারকার্ড, ভোটারকার্ড সহ জমির দলিল বাজেয়াপ্ত করে। ওই শিক্ষকের ভারতীয় নথি থাকলেও তিনি বাংলাদেশের লালমণিরহাটে বসবাস করেন। সেখানকার স্কুলের শিক্ষক। 

    এসএসবি’র এক আধিকারিক বলেন, ওই শিক্ষকের সাহায্যে বছর তিনেক আগে ওই যুবক ভারতে আসে। এরপর নাম পরিবর্তন করে সীমান্তের ওই এলাকায় শিক্ষকের বাড়িতে থাকতে শুরু করে। ভারতীয় নথিও তৈরি করে নেয় সে। উদ্দেশ্য স্থায়ীভাবে ভারতে বসবাস করা। এদিকে, ওই শিক্ষক সপরিবারে বাংলাদেশে রয়েছেন। অথচ তাঁদের সমস্ত ভারতীয় নথি এখানে আছে। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পঞ্চায়েত ভোটে ওই শিক্ষক ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ভোট দিয়েছেন। মাঝেমধ্যে এলাকায় দেখা যেত তাঁদের। পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, ধৃত যুবকের সঙ্গে ওই শিক্ষকের পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। সেই সূত্রেই তাকে ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পাঠিয়েছিলেন। কার্শিয়াংয়ের অতিরিক্তি পুলিস সুপার অভিষেক রায় জানিয়েছেন, এসএসবি এক বাংলাদেশি যুবককে পাকড়াও করে আমাদের হাতে দিয়েছে। ধৃতকে জেরা করা হচ্ছে। 

    উল্লেখ্য, গত দু’মাসে এসএসবি’র অভিযানে ভারত-নেপাল সীমান্ত খড়িবাড়ি ও নকশালবাড়িতে ১০ জন বাংলাদেশি নাগরিক ধরা পড়ল।  ধৃতকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিস। -নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)