• পুলিসে অভিযোগের পরেও সালিশিসভার প্রস্তুতি চলছিল, ডাটিয়নের ঘটনায় ধৃত ৫
    বর্তমান | ২৭ আগস্ট ২০২৫
  • সংবাদদাতা, হরিশ্চন্দ্রপুর: পুলিসের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেও স্থানীয় মাতব্বররা হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সুলতানগঞ্জ পঞ্চায়েতের ডাটিয়ন গ্রামে সালিশিসভা বসানোর প্রস্তুতি নিয়েছিল। স্থানীয় এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতাও সালিশিসভা বসানোর ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যে যুবতীকে কটূক্তি ও অশ্লীল প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর পরিবারও জানিয়েছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিসের কাছেই গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তারপরেও স্থানীয় মাতব্বর বাহিনী ও ওই তৃণমূল নেতা সালিশিসভা ডেকে অভিযুক্তের বিচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা।

    উল্লেখ্য, হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সুলতাননগর পঞ্চায়েতের ডাটিয়ন গ্রামের সোমবার বিকেলের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওইদিন সকালে ওই গ্রামের এক যুবতী মাঠে গোরু বাঁধতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক যুবক তাঁকে নিজের ফোন নম্বর দেওয়ার চেষ্টা করছিল। নম্বর নিতে অস্বীকার করলে যুবতীর সঙ্গে ওই যুবক অশ্লীল ব্যবহার করে বলে অভিযোগ। যুবতী বিষয়টি তাঁর পরিবারকে জানানোর পরই হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। 

    অভিযুক্তকে ধরতে গিয়ে পুলিস জানতে পারে, গ্ৰামে সালিশিসভা বসানোর প্রস্তুতি নিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা জিয়াউল হক এবং কিছু মাতব্বর। অভিযুক্ত যুবককে পুলিসের হাতে তুলে দিতে বলা হয়। কিন্তু পুলিসের হস্তক্ষেপ পছন্দ হয়নি সালিশিসভার উদ্যোক্তা মাতব্বরদের। এরপর পুলিস অভিযুক্ত যুবককে উদ্ধার করতে গেলে মারমুখী জনতার হামলার মুখে পড়ে পুলিস। ভাঙচুর করা হয় পুলিসের গাড়ি। যুবতীর পরিবারের দাবি ওই তৃণমূল নেতার কথাতেই পুলিসের উপর আক্রমণ হয়। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হলে বাড়তি পুলিস নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান হরিশচন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার। ততক্ষণে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ডাটিয়ন গ্ৰাম। দু’জন পুলিস আধিকারিক সহ পাঁচ জন পুলিস কর্মী জখম হন। তাঁদেরকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্ৰামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পাশাপাশি হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকারকেও হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার মালদহের পুলিস সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ইতিমধ্যেই পুলিস পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদিকে গ্রেপ্তার পর্ব শুরু হতেই থমথমে রয়েছে এলাকার পরিস্থিতি। পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে গোটা গ্ৰাম। রাত থেকে গ্রামে চলছে পুলিসের টহলদারি। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা জিয়াউর রহমান বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। আমিই পুলিসকে বাঁচাতে ছুটে গিয়েছি। পুলিস ভিডিও ফুটেজ দেখে তদন্ত করলেই মূল অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা যাবে।

    জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সি বলেন, ডাটিয়নে যা ঘটনা ঘটেছে তার জন্য পুলিস প্রশাসন রয়েছে। পুলিস সঠিক তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
  • Link to this news (বর্তমান)