অনুপ কুমার দাস: খুনের পর এখনও বেপত্তা দেশরাজ। সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে কলেজ ভর্তি হয়েছে। গুলি করে বান্ধবীকে খুনে অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ানের সেই ছেলের খোঁজেই এখন হন্যে পুলিস। কিন্তু পুলিসকে ঘোল খাওয়াতে রীতিমতো পাকা বুদ্ধির অপরাধীদের মতো ঘুঁটি সাজায় দেশরাজ। কিন্তু এমনটা কেন মনে করছেন তদন্তকারীরা? সূত্রের খবর, ছাত্রীর বাড়িতে কোনও সিসিটিভি না থাকলেও আশেপাশের এলাকার সিসিটিভিতে তার কোনও ছবি এখনও পাওয়া যায়নি।
অবশেষে সামনে এল মৃত ছাত্রী ঈশিতার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট।
মাথায় মোট তিনটি গুলি করা হয়, মাথার ডান দিকে দুটি গুলির আঘাত, এবং পিছন থেকে একটি গুলি করে দেশরাজ।
তবে তা সিসিটিভি থেকে লুকিয়ে বাড়িতে প্রবেশের জন্য আগেই রেইকি করে? ওই সময় যে বাড়িতে ছাত্রী একা থাকা তাও কি আগেই জানা ছিল? খুনের আগেই অভিযোগ থেকে বাঁচার পরিকল্পনা যে আগেই করে রেখেছিল তার প্রমাণ মিলেছে খোদ তাঁর বাবার একটি বক্তব্যে থেকে। বাবার দাবি, তাঁর ছেলে উত্তর প্রদেশে যাওয়ার কথা বলেছিল। সেই অনুযায়ী তিনি ২৪ অগাস্ট বিকেল ৩টের সময় পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসের ট্রেনের টিকিট কেটে দেন।
২৪ অগাস্ট দেশরাজ তাঁকে ফোন করে জানান ট্রেনে উঠে গিয়েছে। পরদিন সকাল সাড়ে চারটে নাগাদ ছেলেকে ফোন করেন তারপর থেকে ফোনে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। অথচ ২৫ অগাস্ট সে কৃষ্ণনগরে গিয়ে খুন করে। পুলিসের অনুমান, ছাত্রী বাড়িতে একা থাকাকালীন সেই সময় গুলি করে খুন করে পালিয়ে যাবে। যদি তাঁকে সন্দেহ করা হয় সে অজুহাত দিতে পারবে সে রাজ্যে ছিল না তাঁর আগের দিনই উত্তর প্রদেশের চলে গিয়েছিল।
এখানে পুলিসের আরও ধারণা, ২৪ অগাস্টের ট্রেনের টিকিট কেটেছিল। তাহলে কী সেদিন বা তার আগেই খুনের পরিকল্পনা ছিল। তারপর ট্রেনে করে পালানোর ছক ছিল? সোমবার খুনের পর থেকে দেশরাজের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছে পুলিস। তার কাচরাপাড়ার বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। যদিও এখনও তার নাগাল পাওয়া যায়নি।
মরদেহ সন্ধ্যের আগে কৃষ্ণনগর জিলা হসপিটাল থেকে বেরিয়ে কৃষ্ণনগর মানিকপাড়ায় পৌঁছায় প্রচুর মানুষের ভিড় জমে শেষ দেখার জন্য মেয়েটিকে, ইতিমধ্যে ঈশিতার দিদি উড়িষ্যা থেকে ফিরেছে। সে পড়াশোনা করে উড়িষ্যায়, তার মধ্যে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়, তাতে মেয়েটির জন্য যেন সবার চোখে জল।