চা বলয়ে শক্তিবৃদ্ধিতে জোর তৃণমূলের, উত্তরের ৩ জেলায় ব্লক নেতৃত্বে বড়সড় রদবদল
প্রতিদিন | ২৬ আগস্ট ২০২৫
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে উত্তরবঙ্গের তিন জেলায় ব্লক স্তরের সংগঠনে বড়সড় রদবদল করল তৃণমূল কংগ্রেস। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে তৃণমূল, যুব, মহিলা ও শ্রমিক সংগঠনে ব্লক ও টাউন প্রেসিডেন্ট পদে বদল করা হল। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই এই রদবদল হল বলে খবর। লক্ষ্য ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির গড় দুরমুশ করা। তাই উত্তরবঙ্গের চা বলয়কে ঘিরে বিধানসভা ভোটের আগে সংগঠন আরও মজবুত করতে এই পদক্ষেপ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির অনেক জায়গাতেই বিজেপির শক্ত ঘাঁটি। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি থেকে বিজেপি অনেকগুলি আসন পেয়েছিল। গত লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণবঙ্গে ধাক্কা খেলেও বিজেপি উত্তরে একাধিক আসন ধরে রাখতে সমর্থ হয়। যদিও উত্তরে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলও ভোটব্যাঙ্ক বাড়িয়েছে বলে খবর। কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রেও বিজেপিকে হারিয়ে তৃণমূল জয়ী হয়েছিল। আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট বিধানসভা আসনটি উপনির্বাচনে বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। ফলে সংগঠনকে আরও মজবুত করতে তৃণমূল এই রদবদল করল বলেই খবর।
উত্তরের চা বলয়গুলির ভোটব্যাঙ্ক গেরুয়া শিবিরের দিকে ঝুঁকেছিল গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকেই বিজেপি উত্তরে জমি শক্ত করেছিল। আলিপুরদুয়ারে বিজেপির সাংসদ ছিলেন জন বার্লা। এই চা শ্রমিক নেতার মাধ্যমে বিজেপি একাধিক জায়গায় শক্তি বাড়ায়। সেই জন বার্লা এখন তৃণমূলের নেতা। ফলে তাঁর মাধ্যমেও ওই আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এলাকায় তৃণমূল শক্তি বাড়ানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছনোর বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ থেকে ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’-সহ রাজ্যের প্রকল্পগুলিকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে আরও বেশি করে। এসআইআর থেকে বাংলার শ্রমিকদের উপর বিজেপিশাসিত রাজ্যে ‘অত্যাচারে’র কথা মানুষদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নেতৃত্বের তরফে। সেই জনসংযোগ বাড়ানো ও সংগঠনকে মজবুত করতে এই রদবদল বলেই অনুমান করা হয়েছে।
আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম, কালচিনি, ফালাকাটা-সহ আটটি জায়গায় ব্লক ও টাউন প্রেসিডেন্ট বদল হয়েছে। কুমারগ্রামে তৃণমূলের প্রেসিডেন্ট হয়েছে সুদয় নর্জিনারি। আলিপুরদুয়ার ২- এর প্রেসিডেন্ট হয়েছেন জ্যোতি দাস অধিকারী। কালচিনিতে প্রেসিডেন্ট করা হয়েছে পেমা লামা। জলপাইগুড়ির ১৬টি ব্লক ও টাউনে বদল করা হল নেতৃত্ব। বানারহাটে প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পেলেন সন্দীপ ছেত্রী। ধূপগুড়ি টাউনে কনভেনর করা হয়েছে মহুয়া গোপকে। কোচবিহারের ২২টি ব্লকে সাংগঠনিক রদবদল করল তৃণমূল। মেখলিগঞ্জে দলের প্রেসিডেন্ট করা হয়েছে কেশবচন্দ্র বর্মণকে। হলদিবাড়িতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পেয়েছেন মানস বসুনীয়া।