‘সব চরিত্রই নিজের মতো করে কঠিন’ ছবি নিয়ে আড্ডায় মুখোমুখি অভিনেতা গৌরব চক্রবর্তী
বর্তমান | ২৬ আগস্ট ২০২৫
স্বরলিপি ভট্টাচার্য • ‘ভালো’— ইন্ডাস্ট্রিতে এটাই আপনার বিশেষণ তো?
(হাসি) আমার প্রথম কাজ ‘গানের ওপারে’ থেকে এই ইমেজটা আমার সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে। তাতে আমি বেশ খুশি। পজিটিভ চরিত্র থাকলে আমার মুখটাই পরিচালক-প্রযোজকদের মনে পড়ে।
• সেকারণেই প্রথম নেগেটিভ চরিত্র কি সফল হয়নি?
ঠিকই বলেছেন। দ্বিতীয় ধারাবাহিক ‘অদ্বিতীয়া’। তখন সোশ্যাল মিডিয়া ট্রোলিং ছিল না। তাতেও দেখেছিলাম, কিছু মানুষ লিখছেন, গৌরবকে ভিলেনের চরিত্রে দেখতে চাই না। কিন্তু অভিনেতা হিসেবে বিভিন্ন রকম চরিত্র করতে ইচ্ছে করে। সৌভাগ্যবশত যত দিন এগিয়েছে, ‘অদ্বিতীয়া’র নেগেটিভ চরিত্রর গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছিল। এখনও অনেকে বলেন, সুন্দরবনের যে ভিলেনের চরিত্র করেছিলেন, সেটা চমৎকার। এটাই তো পাওয়া।
• সিনেমা তৈরি নিয়ে পড়াশোনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিনগুলো ফিরে দেখলে কী মনে হয়?
মনে হয়, ভাগ্যিস (হাসি)! তখন সব বন্ধুরা ইঞ্জিনিয়ারিং আর মেডিক্যালের এন্ট্রাস দিচ্ছে। আমিও দিচ্ছি। কিন্তু আমার ভালো লাগছে না। মনে আছে, জয়েন্টের দুটো পরীক্ষা ছিল। প্রথমটা দিয়ে বেরিয়ে দেখলাম, একটা ছেলেকে তার মা পড়া ধরছে। বাবা খাইয়ে দিচ্ছে। আর ছেলেটি পরবর্তী পরীক্ষার পড়া রিভিশন করছে। মনে হয়েছিল, এটা আমার জন্য নয়। দ্বিতীয় পরীক্ষাটা না দিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। ওই পরিস্থিতিতে ফিল্ম স্টাডিসের বিষয়ে প্রথম জেনেছিলাম। পড়লাম। সেখান থেকে সব কিছু শুরু।
• ‘সরলাক্ষ হোমস’ অন্য ধারার ছবি?
এটা ঝুঁকির কাজ। শার্লক হোমস পড়ে আমরা বড় হয়েছি। আমরা জানি এটি ভিক্টোরিয়ান ইংল্যান্ডের ব্রিটিশ চরিত্র। এই ছবিতে তাকে বাঙালি করা হয়েছে। ইংল্যান্ডে থাকলেও বাংলার সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। সেকারণে তার নাম সরলাক্ষ, সে বাংলায় কথা বলে। আবার পদবি হোমস। একই সঙ্গে ইংরেজ যোগাযোগও রয়েছে।
• আপনার চরিত্র?
‘হাউন্ড অব দ্য বাস্কারভিলস’ যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা জানেন মূল চরিত্র হেনরি বাস্কারভিলকে ঘিরেই গল্প। তার কাকা গল্পের শুরুতেই অদ্ভুত ভাবে মারা যায়। নিজের জমিদারিতে ফিরলে মৃত্যু হতে পারে, এমন হুমকি তাকে দেওয়া হচ্ছে। তখন শার্লককে এই রহস্য উদঘাটনের দায়িত্ব দেয় সে। সাধারণত গোয়েন্দা গল্পে মক্কেলের চরিত্রে যাঁরা অভিনয় করেন, তাঁদের পার্শ্বচরিত্র হিসেবেই দেখা হয়। কিন্তু এই গল্পে তা নয়।
• কেরিয়ারে এখনও পর্যন্ত সবথেকে কঠিন চরিত্র কোনটা?
সবচেয়ে কঠিন, বলা খুব কঠিন (হাসি)। আমার মনে হয় ‘ছোটলোক’ সিরিজের চরিত্রটির চরিত্রায়ন বেশ কঠিন। ‘আবার প্রলয়’-এর ‘কানু’ আমার থেকে সবচেয়ে আলাদা একটি চরিত্র। ‘অদ্বিতীয়া’র চরিত্রটিও বেশ কঠিন ছিল। সব চরিত্রই নিজের মতো করে কঠিন।
• হাতে কাজ না থাকলে নিজেকে মোটিভেট করেন কীভাবে?
নিজেকে সারাক্ষণ প্রস্তুত করি। জানি না, কেরিয়ারের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রটা এরপর হয়তো আসছে। সেটাই মনোবল জোগায়।
• কাজ চেয়েছেন কখনও?
হ্যাঁ, বেশ কয়েকবার ফোন করে কোনও পরিচালকে বলেছি, যে ছবিটা করছ, মুখ্য চরিত্রে আমি খুব ভালো ম্যাচ করি বলে মনে হচ্ছে। আমি কি চরিত্রটা করতে পারি? সেটা যে সবসময় খুব কাজ করেছে, তা নয় (হাসি)। তবে সিনেমা পরিচালকের মাধ্যম। তিনিই শেষ কথা।