কিছু দিন আগে লালগোলার তারানগরে পদ্মায় প্রবল ভাঙন হয়েছিল। এ বার পদ্মা নদীতেই ভাঙন শুরু রানিতলা থানার আখরিগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজাপুর পাতিবোনা এলাকায়। রবিবার ভাঙনে তলিয়ে যায় বিএসএফের একটি ওয়াচ টাওয়ার (নজর মিনার)। এ নিয়ে ভগবানগোলা-২ ব্লকের বিডিও অনির্বাণ সাহু বলেন, “যে টাওয়ারটি ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে সেটি আসলে বিএসএফের সোলার ইউনিট। তার মাথার উপর ওয়াচ টাওয়ার গড়ে তোলা হয়েছিল। ভাঙনে টাওয়ার ভেঙে পড়ায় সীমান্তে নজরদারিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।”
পদ্মা নদী ভগবানগোলা থানার চরলবণগোলা এলাকায় ভাগ হয়ে গিয়েছে। মূল স্রোত প্রবাহিত হয়েছে রানিতলার আখেরিগঞ্জ পঞ্চায়েতের পাতিবোনা, মদনঘাট ও মাঝপাড়ার উপর দিয়ে। অন্য অংশটি শাখা নদীর আকারে বয়ে গিয়েছে নশিপুর ও খড়িবোনা অঞ্চলে। সীমান্তবর্তী পাতিবোনা এলাকা জিরো পয়েন্ট হওয়ায় এখানে নদীর গভীর প্রবাহের কারণে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে মদনঘাট বিএসএফ আউটপোস্টের অধীন পাতিবোনা এলাকায় ওয়াচ টাওয়ার থেকে সীমান্তে নজরদারি চালানো হয়। সেটি ভেঙে পড়ায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তবে এই বিষয়ে বিএসএফের তরফে সরকারি ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে বিএসএফের এক আধিকারিক জানান, বিষয়টি উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের জানানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, কিছু দিন আগে রানিনগরের হারুডাঙায় ‘পাড়া সমাধান’ ক্যাম্পে জেলা পরিষদের অতিরিক্ত জেলাশাসক গিয়েছিলেন। সেখানে এক বিএসএফ আধিকারিক তাঁকে ভাঙনের বিষয়টি জানান। এ দিকে, এ দিন টাওয়ার ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা গিয়ে ওয়াচ টাওয়ারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। সোলার প্যানেল ও অন্য সরঞ্জাম ভাঙনে তলিয়ে যায়। আখেরিগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, সিপিএমের সাহিন শেখ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই ঘটনা নতুন নয়। দীর্ঘ দিন ধরে আখেরিগঞ্জে নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু ভাঙন রোধে কোনও স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পদ্মার ও পারে বাংলাদেশের রাজশাহি জেলায় ভাঙন রোধের কাজ হয়েছে। তার জেরে স্রোতের ধাক্কা এসে আঘাত হানছে আমাদের এলাকায়। তাই বার বার আখেরিগঞ্জ ভাঙনের কবলে পড়ছে।”
এলাকাবাসীর আতঙ্ক আরও বেড়েছে নতুন করে ভাঙন শুরু হওয়ায়। বর্তমানে নদী জনবসতির ছ’শো মিটার কাছে চলে এসেছে। ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য দীপালি মণ্ডল বলেন, “ইতিমধ্যে বিঘার পর বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। ভাঙনের ফলে বহু মানুষ কৃষক থেকে মজুরে পরিণত হয়েছেন। এ বার জনবসতিও পদ্মার মুখে এসে পড়েছে। অথচ ভাঙন রোধে কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।”