• সাড়া দেবে হুইলচেয়ার, পুরস্কৃত ছাত্র জুটির মডেল
    আনন্দবাজার | ২৬ আগস্ট ২০২৫
  • বিশ্বখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের ‘হাইটেক’ হুইলচেয়ারের কথা সর্বজনবিদিত। পক্ষাঘাতগ্রস্ত হকিং তাতে বসেই সব কাজ করতেন। তেমনই কাঠ দিয়ে নানা সুবিধাযুক্ত হুইলচেয়ারের মডেল গড়ে তাক লাগাল ডোমজুড়ের বেগড়ি হাই স্কুলের (বালক) একাদশ শ্রেণির অয়ন দাস ও প্লাবন পাল। এই জুটির উদ্ভাবন ২৮তম জাতীয় বিজ্ঞান প্রদর্শনীতে সিনিয়র বিভাগে প্রথম স্থান দখল করল।

    সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্ক ময়দানে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক আয়োজিত জাতীয় বিজ্ঞান প্রদর্শনী হয় গত ২১ থেকে ২৪ অগস্ট। জুনিয়র বিভাগেও হাওড়ার এই স্কুলের মডেল মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছিল।

    অয়ন ও প্লাবন ‘হাইটেক’ হুইলচেয়ারের মডেলটি তৈরি করে স্কুলের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক প্রীতিময় ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে। ওই শিক্ষক জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে রাজ্যের শতাধিক স্কুলের সঙ্গে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে মডেলটি মূল পর্বে যাওয়ার ছাড়পত্র পায়। চূড়ান্ত পর্বে ৩২টি স্কুলের মধ্যে এই মডেলটিই সেরার শিরোপা পায়।

    প্রীতিময়ের দাবি, এই হুইলচেয়ারে বসে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এক জন তাঁর সক্ষম অঙ্গের মাধ্যমে এটি ব্যবহার করতে পারবেন। হাত, পা, এমনকি ,চোখের মণি দিয়েও নিজেই চালনা করা যাবে। এগুলি প্রদর্শনীতে করে দেখানো হয়েছে। এটিতে করে বাড়ির ভিতরে ঘোরাফেরা করা শুধু নয়, টিভি, আলো, পাখা ইত্যাদি চালাতে পারবেন ব্যবহারকারী।

    বাড়ির বাইরে থাকার সময়ে হুইলচেয়ার আরোহী কোথায় আছেন, জিপিএস ট্র‍্যাকিংয়ের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যেরা তা জানতে পারবেন। চলার সময় হুইলচেয়ারের সামনে কিছু এসে পড়লে সেটি তৎক্ষণাৎ দাঁড়িয়ে পড়বে। ‘হাম্প’ থাকলে নিজে থেকেই গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করবে। হুইলচেয়ারে বসে থাকার সময়ে কোনও শারীরিক সমস্যা হলে সেটির সঙ্গে সংযুক্ত মোবাইল ফোনে দ্রুত সেই বার্তা পৌঁছে যাবে নিকটজনের কাছে। ১২ ভোল্টের একটি ব্যাটারির শক্তিতেই এটি চলবে।

    অয়ন-প্লাবন জানায়, হুইলচেয়ারটি তৈরিতে প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বেশি সংখ্যায় তৈরি করলে এক-একটি ১২-১৩ হাজার টাকাতেই হয়ে যাবে বলে তাদের ধারণা। অয়নের কথায়, ‘‘সাধারণ একটি মোবাইল ফোনের খরচেই এমন হুইলচেয়ার হয়ে যাবে।’’

    প্রধান শিক্ষক বিপ্লব গিরি বলেন, ‘‘অমন প্রতিযোগিতায় আমাদের মডেল সেরা নির্বাচিত হয়েছে, এটা বিশেষ প্রাপ্তি।’’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আসানুল করিম বলেন, ‘‘জেলার পক্ষে খুবই গর্বের বিষয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্রদের অভিনন্দন।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)