• পরিযায়ী ভাতা শুরু, হতাশ ‘যুবশ্রী’র আবেদনকারীরা
    আনন্দবাজার | ২৬ আগস্ট ২০২৫
  • সম্প্রতি পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য পাঁচ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁরা ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে আসবেন ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে আগামী এক বছর এই ভাতা পাবেন তাঁরা। এ দিকে, বেকার যুবক-যুবতীদের ‘যুবশ্রী’ প্রকল্পে নতুন করে ভাতার অনুমোদন দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ। যাঁরা উপভোক্তা আছেন, তাঁরাও চার মাস ধরে টাকা পাচ্ছেন না। লক্ষ্মীর ভান্ডারে নতুন আবেদনকারীদের নামও অনুমোদিত হয়নি। ফলে, পরিযায়ী ভাতায় ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে নানা মহলে।

    নিয়ম অনুযায়ী অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ও ১৮ বছর বয়স হলে এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে নাম নথিভুক্ত করতে পারেন বেকার যুবক-যুবতীরা। তারপরে যুবশ্রী প্রকল্পে মাসে ১,৫০০ টাকা ভাতা পাওয়া যায়। পরে সরকারি চাকরি পেলে বা ৪৫ বছর বয়স হয়ে গেলে এই প্রকল্পে থেকে নাম বাদ যায়। জানা গিয়েছে, প্রতি বছরে ৮-১০ হাজার প্রাপক সেই নিয়মে বাদ পড়েন। তারপরে নাম লেখানোর অগ্রধিাকারের ভিত্তিতে আবার ৮-১০ হাজার নতুন ভাতা প্রাপক যুবশ্রীতে অন্তর্ভুক্ত হন। কিন্তু এই ভাতার ‘কোটা’ না বাড়ায় ২০১৩ সালের ২১ মার্চ পর্যন্ত যাঁরা নাম লিখিয়েছিলেন, তাঁরাই এখন ভাতা পাচ্ছেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, এটা গোটা রাজ্যের ছবি।

    ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড় ব্লকের গোহমিডাঙার বাসিন্দা মানস মণ্ডল বলেন, ‘‘পাঁচ দিন আগে এক মাসের টাকা পেয়েছি। এখনও চার মাসের টাকা বাকি। গৃহশিক্ষকতা করে দিন চালাচ্ছি। চাকরি তো নেই।’’ জামবনি ব্লকের মালবাঁধি গ্রামের কনকদুর্গা দত্তের কথায়, ‘‘২০১৩ সালে এপ্রিলে যুবশ্রীতে আবেদন করেছি। ‘দিদিকে বলো’, ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’-তে ফোন করে জানিয়েছি। বাড়িতে ভেরিফিকেশনের জন্য এসেছিল। তবুও ভাতা পাচ্ছি না। কাজও পাচ্ছি না’’

    প্রশাসন সূত্রে খবর, গোটা রাজ্যে যুবশ্রী ভাতার জন্য ‘যোগ্য’ আবেদনকারীর সংখ্যা প্রায় ৩৫ লক্ষ। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘যুবশ্রী প্রকল্পে উপভোক্তাদের টাকা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য থেকে নিয়ন্ত্রিত। এ ক্ষেত্রে জেলার কোনও ভূমিকা নেই।’’ বিরোধীদের অভিযোগ, এই প্রকল্পে সরকার উদাসীন। কারণ, যুবশ্রী প্রাপকদের সংখ্যা বেশি হলে প্রমাণ হয়ে যাবে রাজ্যে বেকারত্বের ছবিটা কী মারাত্মক। তাই এই প্রকল্পে ‘কোটা’ বাড়ানো হয়নি। ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডুর কটাক্ষ, ‘‘রাজ্যে কর্মসংস্থান নেই। শিক্ষিতরাও বেকার। বাধ্য হয়ে ভিন্‌ রাজ্যে গিয়ে যুবক-যুবতীরা কাজ করছেন। আর মুখ্যমন্ত্রী ভিন রাজ্য থেকে পরিযায়ীদের ফিরিয়ে এনে টাকা দেবেন বলছেন। সব ভোট আদায়ের ফন্দি।’’ জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু পাল্টা বলেন, ‘‘যুবশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডার সব মুখ্যমন্ত্রী চালু করেছেন। এমন মানবিক চিন্তা অন্য রাজ্যে দেখা যায় না। হয়তো দেরি হচ্ছে। তবে নিশ্চিত সবাই টাকা পাবেন।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)