নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কোনওদিন অফিস থেকে ফেরার সময় হেলমেটে পরেন না। পাড়ায় বলতেন হেলমেটে না পরলেও পুলিস কিছু বলে না। অবশেষে বাইকচালকের এই আশ্চর্য দাবির পর্দা ফাঁস হল। এক ট্রাফিক সার্জেন্ট বিনা হেলমেটের বাইকচালককে আটকান। উর্দিধারীর চোখে সন্দেহজনক বলে মনে হয় বাইকের নম্বরপ্লেটটি। পুলিসের কড়া চোখের সামনে নতি স্বীকার করলেন বাইকচালকে। অন্য বাইকের নম্বরপ্লেট ‘নকল’ করে নিজের বাইকে লাগিয়ে ছিলেন যুবক। পুলিসি জরিমানা এড়াতেই তাঁর এই ফন্দি।
রবিবার রাত আটটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। মহাত্মা গান্ধী রোড ও স্ট্র্যান্ড রোড ক্রসিংয়ে নাকা চেকিংয় চালাচ্ছিল হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ড। সেখানেই কর্তব্যরত ছিলেন সার্জেন্ট সন্তু পাল। বিনা হেলমেটে হাওড়া ব্রিজে উঠতে যান ওই যুবক। ট্রাফিকবিধি ভাঙায় লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করে কেস করতে যান সার্জেন্ট। কিন্তু, লাইসেন্স দিতে কিছুতেই রাজি হননি বাইকচালক। বারবারই গাড়ির নম্বরপ্লেটের ছবি নিয়ে ‘স্পট ফাইন’ করার আর্জি জানাতে থাকেন যুবক। অদ্ভুত দাবি শুনে সন্দেহ হয় পুলিস অফিসারের। পুলিসের অ্যাপে বাইকের নম্বরপ্লেট যাচাই করতে যান। সেখানেই দ্বিতীয় খটকা লাগে উর্দিধারীর। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিসকে বাইকচালক জানান, গাড়িটি তাঁর নিজের। তাঁর নামেই ‘রেজিস্টার্ড’ বাইকটি। কিন্তু, নম্বরপ্লেট যাচাই করে ট্রাফিক সার্জেন্ট দেখেন, অ্যাপে বাইকের মালিক হিসেবে অন্য নাম দেখাচ্ছে। তাহলে কি বাইকটি চুরি করা হয়েছে?
জেরায় শেষমেশ বাইকচালক স্বীকার করেন, পুলিসের জরিমানার টাকা যাতে নিজের ট্যাঁক থেকে খরচ না হয় তার জন্য বন্দোবস্ত করেন তিনি। মল্লিকবাজার থেকে নম্বর বদল করেন যুবক। এরপরে চারবার পুলিসি খপ্পরে পড়েছেন অভিযুক্ত। বারবারই তিনি পুলিসকে আর্জি জানান, লাইসেন্স হারিয়ে গিয়েছে, কেস দিতে হলে বাইকের নম্বরের ছবি তুলে অনলাইনে দিয়ে দিতে। ‘স্পট ফাইন’ কেস করেই তাঁকে ছেড়ে দিত পুলিস। কিন্তু, তাঁর নামে যেত না জরিমানার রসিদ। শেষমেশ রবিবার রাতে পালে বাঘ পড়ল।
ঘটনাস্থল থেকে আটক করে যুবককে উত্তর বন্দর থানায় নিয়ে যায় হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের পুলিস। সেখানেই অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিস। বাজেয়াপ্ত করা হয় বাইকটিকেও। পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। কবে এই কাজ সে করেছিল? তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।