• দিনের আলোয় রাস্তাতেই শিক্ষককে কাটারির কোপ জেলখাটা যুবকের! রক্তারক্তি কাণ্ডে হুলস্থুল
    প্রতিদিন | ২৬ আগস্ট ২০২৫
  • রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: শিক্ষককে কাটারির কোপ জেলখাটা অভিযুক্তের। শরীর থেকে আলাদা হয়ে গেল শিক্ষকের ডানহাতের পাঞ্জা। ঘটনায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিক্ষক গোকুল চন্দ্র মুড়াকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর ভগবানপুর শিমুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ ফুলবেড়িয়া গ্রামে। জানা গিয়েছে, স্কুলে যাওয়ার সময় সোমবার সকালেই অতর্কিতেই গোকুলবাবুর উপর এই হামলার ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত যুবকের নাম নন্দ মুড়া। তবে কেন এই হামলা তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুরানো আক্রোশ থেকেই এই ঘটনা বলে অনুমান পুলিশের।

    তবে ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত যুবক। তাঁর খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি। তবে এই ঘটনার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষজন। প্রশ্ন তুলছেন নিরাপত্তা নিয়ে।

    আক্রান্ত শিক্ষক গোকুলচন্দ্র মুড়া ভগবানপুর এক ব্লকের সিমুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। এলাকায় একজন সৎ, শান্ত ও জনপ্রিয় শিক্ষক হিসেবেই পরিচিত। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত চার বছর আগেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যায় আক্রান্ত শিক্ষকের নাবালিকা মেয়ে। সেই সময় অভিযুক্ত নন্দ মুড়ার নামে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ জানান গোকুলবাবু। অভিযোগ ছিল, পাড়ার ছেলে নন্দই তাঁর মেয়ের নিখোঁজের ঘটনার সঙ্গে জড়িত। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নামে স্থানীয় ভগবানপুর থানার পুলিশ।

    অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শিক্ষকের নাবালিকা মেয়েকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় নন্দকে। সেই মামলায় দীর্ঘদিন জেলও খাটেন তিনি। কয়েকমাস আগে নিম্ন আদালত থেকে জামিন পান নন্দ। পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি এই মামলায় অভিযুক্ত নন্দের জামিন খারিজ চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন গোকুল চন্দ্র মুড়া। আর সেই খবর অভিযুক্ত যুবকের কাছে কোনওভাবে পৌঁছে যায়! সম্ভবত সেই আক্রোশ থেকেই এদিনের এই হামলা বলে অনুমান পুলিশের।

    প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আজ সোমবার যখন স্কুলে যাচ্ছিলেন গোকুল চন্দ্র মুড়া সেই সময় অতর্কিতেই কাটারি হাতে অভিযুক্ত নন্দ এই হামলা চালান। কোনওরকমে গলা বাঁচালেও কাটারির কোপ গিয়ে পড়ে শিক্ষকের ডান হাতের কব্জিতে। আঘাত এতটাই তীব্র ছিল যে শিক্ষকের হাতের পাঞ্জা সম্পূর্ণ কেটে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ওই শিক্ষক।

    এরপর স্থানীয় মানুষজনই সংজ্ঞাহীন অবস্থায় শিক্ষককে ভগবানপুর হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এই ঘটনায় দক্ষিণ ফুলবেড়িয়া গ্রাম-সহ গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। একজন শিক্ষক যিনি সমাজ গড়ার কাজে নিয়োজিত, তাঁকে লক্ষ্য করে এমন হামলায় ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয়রা। শুধু তাই নয়, দিনের বেলা কাটারি হাতে হামলায় ছড়িয়েছে আতঙ্ক।
  • Link to this news (প্রতিদিন)