• অঝোরে বৃষ্টি, শুকোচ্ছে না মাটি! ঠিক সময়ে প্রতিমা ডেলিভারি করা যাবে তো? চিন্তায় মৃৎশিল্পীরা
    প্রতিদিন | ২৬ আগস্ট ২০২৫
  • সুমন করাতি, হুগলি:  অঝোরে বৃষ্টি। আর্দ্রতাও বেশি স্বাভাবিক নিয়মেই। শুকোচ্ছে না মাটি। হাতে যখন আর মাত্র কয়েকটা দিন, তখন ঘুম উড়েছে কুমোরটুলির। মাতৃ প্রতিমায় শেষ প্রলেপ দেওয়ার সময় এসে গিয়েছে, হাতে তো আর বেশিদিন নেই! অথচ মাটি এখনও স্যাঁতস্যাঁতে। ফলে বাড়ছে খরচ। শুধু তাই নয়, ঠিক সময়ে প্রতিমা ডেলিভারি নিয়েও কপালে চিন্তার ভাঁজ মৃৎশিল্পীদের। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর বাকি বেশিদিন নেই। সেপ্টেম্বর মাস পড়লেই শুরু হয়ে যাবে কাউন্ট ডাউন। আর এই মুহূর্তে বৃষ্টি সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ।

    একটানা বৃষ্টি হয়ে চলেছে গত দু’মাসের বেশি সময় ধরে। তার মধ্যে হাজির নিম্নচাপ। তার প্রভাবে বৃষ্টি কখনও ভারী, কখনও হালকা বা মাঝারি। তবে একটানা মেঘলা স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ার জেরে মাটির প্রতিমা শুকনো হচ্ছে না। গ্যাস গান দিয়ে মাটি শুকনো করা হচ্ছে। এছাড়া কাঠ কয়লা পুড়িয়েও চলছে মাটি শুকনোর কাজ।

    চুঁচুড়া ধরমপুরে কৃষ্ণনগর থেকে এসে প্রতিমা গড়েন বীরেন পাল। তাঁর ঠাকুর গড়তে গোলায় শিল্পীরা আসেন কৃষ্ণনগর থেকে। শিল্পীদের মজুরি থেকে মাটি, খড়, দড়ি, পেরেক সব জিনিসেরই দাম বেড়েছে। তার উপর আবার বর্ষায় প্লাস্টিক ঢেকে আগুন দিয়ে মাটি শুকতে গিয়ে খরচ বাড়ছে আরও। মাটি না শুকোলে তো রঙই করা যাবে না। হাতে যা সময় আছে তাতে সূর্যের আলোর ভরসা আর করা যাচ্ছে না।

    মৃৎশিল্পী বীরেন পাল জানান, ”প্রায় পাঁচ মাস ধরে দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ চলে। কিন্তু একটানা বৃষ্টি বাধ সাধছে। খরচ বাড়ছে। খুবই ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।” দিন রাত জেগে ঠাকুর তৈরি করে চলেছেন আরও এক মৃৎশিল্পী রাজা পাল। তিনি জানান, ”রোজই বৃষ্টি হচ্ছে। ঠাকুর শুকোচ্ছে না। গ্যাস গানের সাহায্যে ঠাকুর শুকাতে হচ্ছে। গ্যাস, কয়লা কিনতে অনেক টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে।” ফলে যে সময়ে কাজ শেষ হওয়ার কথা সেই সময়ের মধ্যে প্রতিমা দেওয়া নিয়ে ক্রমশ দুশ্চিন্তা বাড়ছে বলে জানান রাজা।

    তাঁর কথায়, ”পুজোর পর তো ঠাকুর দেওয়া যাবে না! সবাই মিলে দিন রাত জেগেই কাজ করতে হচ্ছে।” এর মধ্যেই বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর হাওয়া অফিস। ফলে কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে সেটাই ভাবাচ্ছে মৃৎশিল্পীদের।
  • Link to this news (প্রতিদিন)