নবনীতা সরকার: কলকাতা শহরে প্রথমবারের মতো 'সিনিয়র সিটিজেন্স স্পোর্টস সামিট' (Senior Citizen Sports Summit) আয়োজন করল মণিপাল হাসপাতাল, যা প্রবীণ নাগরিকদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি করেছে। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার অরুণ লাল, যিনি প্রদীপ জ্বালিয়ে সামিটের সূচনা করেন। মণিপাল হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসকরাও এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
মূল আকর্ষণ:
এই সামিটে ১০০ জনেরও বেশি প্রবীণ নাগরিক অংশ নেন এবং বিভিন্ন খেলায় নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শন করেন। তাঁদের জন্য আয়োজিত খেলাগুলোর মধ্যে ছিল দাবা, ক্যারম, মানব বল-চামচ দৌড়, মিউজিক্যাল চেয়ার, গেস দ্য ভেজিটেবল এবং টেইলিং বি। এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল প্রবীণদের শারীরিক সুস্থতা, মানসিক সজাগতা এবং সামাজিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করে তাদের একটি আনন্দময় পরিবেশে যুক্ত করা।
বিশেষজ্ঞদের প্যানেল আলোচনা:
অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ অংশ ছিল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে আয়োজিত প্যানেল আলোচনা, যেখানে প্রবীণদের সামগ্রিক সুস্থতার গুরুত্ব নিয়ে মতবিনিময় করা হয়। এই আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন:
ডা. জয়ন্ত রায় (ডিরেক্টর ও হেড – নিউরোলজি, মণিপাল হাসপাতাল, কলকাতা)
ডা. কুশল সরকার (ডিরেক্টর – কার্ডিওভাসকুলার ও থোরাসিক সার্জারি, মুকুন্দপুর ক্লাস্টার)
ডা. দেবরাজ জয় (কনসালটেন্ট – পালমনোলজি, ধড়ওয়া)
ডা. শুভাশিষ রায় চৌধুরী (কনসালটেন্ট – কার্ডিওলজি, ধড়ওয়া)
ডা. বিভিক সিনহা (কনসালটেন্ট – ডায়াবেটিস ও এন্ডোক্রিনোলজি, ধড়ওয়া)
ডা. দেবাশিস চক্রবর্তী (কনসালটেন্ট – অর্থোপেডিক্স, মুকুন্দপুর)
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের বিশিষ্ট চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন, যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ডা. বিকাশ কাপুর, ডা. অরিন্দম পান্ডে, ডা. সুজয় দাস ঠাকুর, ডা. চন্দ্রদ্বীপ চক্রবর্তী, ডা. পারমিতা কাঞ্জিলাল, ডা. রিতা মিত্র, ডা. জয়ন্ত দাস এবং আলোচনায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য চিকিৎসকরা।
মণিপাল হাসপাতাল - ইস্ট-এর আঞ্চলিক চিফ অপারেটিং অফিসার ডা. অনিল দেবগুপ্ত বলেন, "মণিপাল হাসপাতাল প্রতিটি বয়সের মানুষের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রবীণদের এভাবে আনন্দ নিয়ে খেলাধুলা করতে দেখে আমরা আশ্বস্ত যে বয়স কেবল একটি সংখ্যা। যদি জীবনের প্রতি উৎসাহ অটুট থাকে, তবে এমন অনুষ্ঠানগুলো প্রবীণদের আরও সামাজিকভাবে যুক্ত করে এবং তরুণ প্রজন্মকে শেখায় যে স্বাস্থ্যই প্রকৃত সম্পদ। বয়স কোনো বাধা নয়, বরং প্রজ্ঞা, প্রতিশ্রুতি এবং আনন্দে ভরপুর জীবনের এক নতুন অধ্যায়।"
কলকাতায় প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই 'সিনিয়র সিটিজেন্স' স্পোর্টস সামিট প্রমাণ করল যে বয়স বাড়া মানে আনন্দ, ফিটনেস বা সুস্থতা থেকে পিছিয়ে পড়া নয়। এটি কেবল একটি প্রতিযোগিতা ছিল না, বরং সুস্থ জীবন, বন্ধুত্বের বন্ধন এবং আনন্দময় স্মৃতির এক অসাধারণ উদযাপন।