• 'প্রেমিক' প্রসেনজিত্‍ই অসীমবাবুর খু*নি! মোবাইলে ন*গ্ন ছবি, ব্ল্যাকমেইল, অন্য প্রেমের হাতছানি...
    ২৪ ঘন্টা | ২৫ আগস্ট ২০২৫
  • দেবব্রত ঘোষ: সমপ্রেম সম্পর্কের ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল। তার জেরে খুন গোলাবাড়ি এলাকার বৃদ্ধ। ফ্ল্যাটের মধ্যে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙা থেকে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত। তাকে গ্রেফতার করে গোলাবাড়ি থানার পুলিস। ধৃতকে আজ হাওড়া আদালতে তোলা হয়। 

    ঘটনার ফ্ল্যাশব্যাক:


    গত বৃহস্পতিবার রাত দশটা নাগাদ উত্তর হাওড়ার অরবিন্দ রোডের ইন্দিরা ভবনের ফ্ল্যাটে খুন হন অসীম দে (৬৪) নামে এক বৃদ্ধ। তারপরের দিন পরিবারের লোকেরা গোলাবাড়ি থানায় খবর দিলে তদন্ত শুরু করে পুলিস। পুলিস পাশের ফ্ল্যাট থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। তাতে দেখা যায় বৃহস্পতিবার রাত সোয়া আটটা নাগাদ এক ব্যক্তি ব্যাগ হাতে ওই ফ্ল্যাটে ঢুকছে। রাত দশটা কুড়ি নাগাদ সে ফ্লাট থেকে বেরিয়ে যায়। যাওয়ার সময় সে অসীমের দুটি সোনার আংটি এবং মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। অসীমের বাড়ির লোকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস খুনের মামলা শুরু করে। 

    তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য়:


    তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে মাস চারেক আগে ফেসবুকের মাধ্যমে অসীম বাবুর সঙ্গে পরিচয় হয় ধৃত প্রসেনজিৎ চৌধুরী (৩১)র। পেশায় কাপড় বিক্রেতা প্রসেনজিৎ- মঙ্গলাহাট, গোবরডাঙা হাট সহ বিভিন্ন হাটে কাপড় বিক্রি করত। মাস চারেক আগে দুজনের মধ্যে আলাপের পর মাসখানেক আগে তারা দুজনেই সালকিয়ার বাঁধাঘাটে সাক্ষাৎ করে। এরপর দুজনের মধ্যে ভিডিয়ো কলে কথাবার্তা চলতে থাকে। এই ভিডিয়ো কল চলাকালীন অসীম প্রসেনজিতের বেশ কিছু আপত্তিকর ছবি তুলে রাখেন। 

    পুলিস তদন্তে উঠে আসে, ওই গোপন ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে নিজের ফ্ল্যাটে ডাকেন অসীমবাবু। গত বৃহস্পতিবার একইভাবে প্রসেনজিৎকে সালকিয়ার ফ্ল্যাটে ডেকেছিলেন। এটা ছিল তার দ্বিতীয় দিন। প্রসেনজিৎ ফ্লাটে ঢোকার আগে মদ, কচুরি এবং তরকারি কিনে ঢোকে। এরপর দুজনে একসঙ্গে মদ্যপানের পর খাবার খায়। দুজনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কের পর গোপন ছবি ভাইরালের হুমকি নিয়ে বচসা শুরু হয়ে যায়। 

    রাগের মাথায় অসীমকে খুন:


    তারপর রাগের মাথায় প্রসেনজিৎ অসীমবাবুর মাথা দেওয়ালে ঠুকে দেয়। মাথার মধ্যে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের জন্য ঘটনাস্থলেই মারা যান অসীমবাবু। ফ্ল্যাট ছাড়ার আগে প্রসেনজিৎ ওই বৃদ্ধের হাতের দুটি সোনার আংটি এবং মোবাইল ফোনটি নিয়ে চম্পট দেয়। পরে পুলিস মোবাইল ফোন এবং সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে আততায়ী প্রসেনজিতের খোঁজ পায়। গতকাল তাকে গোবরডাঙ্গার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা শুরু করেছে পুলিস। 

    আজ ধৃতকে হাওড়া আদালতে তুলে ১৪ দিনের পুলিস হেফাজতের জন্য আবেদন করা হয়েছে। রবিবার ঘটনাস্থল থেকে ফরেনসিক টিম খাবারের টুকরো, আধপোড়া সিগারেট এবং মদের বোতল উদ্ধার করে। ধরা পড়ার পর প্রসেনজিৎ তার সমস্ত অপরাধ পুলিসের কাছে স্বীকার করেছে। 

    প্রসেনজিতের প্রেমকাহিনী:


    পুলিস জানায়, তার একাধিক পুরুষ সঙ্গী আছে। এমনকি অসীমবাবুর চুরি করা সোনার আংটি তার এক বন্ধুকে উপহার দেয় সে। ধৃতকে আজ সালকিয়ার ফ্ল্যাটে নিয়ে যায় তদন্তকারী আধিকারিকরা। সেখানে গোটা ঘটনার পুনঃনির্মাণ করা হয়। প্রসেনজিৎ পুলিসকে দেখায় সে কিভাবে ওই বৃদ্ধকে খুন করেছিল। পুনর্নির্মাণ ক্যামেরাবন্দি করে পুলিস। এছাড়াও যে দোকান থেকে কচুরি এবং মদ কিনেছিল সেখানকার কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিস।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)