নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: নজির তৈরি করল প্রতীমস লেন। রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে সতেরোটি বাড়ি নিয়ে এই পাড়া। যদিও এই পাড়ার পোশাকি ঠিকানা আর এন টেগোর রোড। স্থানীয় বাসিন্দারাই নাম রেখেছেন প্রতীমস লেন। এই নামের গায়ে কোনও সরকারি তকমা না থাকলেও লোকমুখে পরিচিতি পেয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, গলিতে কোন বাড়ি কার, তা চেনাতেও অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন বাসিন্দারা।
গলির ধারে পরপর বাড়ি। সেই মতো আলাদা আলাদা নম্বর দিয়েছেন তাঁরা। প্রতিটি দরজায় নম্বর সাঁটা ১, ২, ৩...। আর গলির মুখে টাঙানো হয়েছে বড় বোর্ড। তাতে বড় বড় হরফে লেখা ১ নম্বর বাড়ি অমুকের, ২ নম্বর বাড়ি তমুকের...। এভাবে নম্বরের পাশে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম লিখে দেওয়ায় অচেনা লোকও চোখ বন্ধ করে পৌঁছে যেতে পারবেন গন্তব্যে।
বাসিন্দাদের কথায়, প্রায়ই দেখা যায় বাইরে থেকে অচেনা কেউ এলে, একে ওকে জিজ্ঞাসা করেন, অমুক কোন বাড়িতে থাকেন? ঠিকানা জানা না থাকলে সত্যিই বাড়ি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। অনলাইন সামগ্রীর ডেলিভারি বয়’রা অনেক সময় হন্যে হয়ে বাড়ি খুঁজে বেড়ান, ঘন ঘন ফোন করেন অর্ডারের মালিককে। এমন ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটছে। এমনকী, বাড়ি খুঁজে না পেয়ে ফিরে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। কখনও আবার ক্যুরিয়ার সংস্থার লোক এসে ঠিকানা খুঁজে না পেয়ে চলে গিয়েছেন। এর ফলে অনেক সময় হয়রানি হতে হয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে। এই ঝক্কি থেকে রেহাই পেতেই অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মূল উদ্যোক্তা প্রশান্ত দাস। তিনি বলেন, পাড়ার সবাইকে ডেকে আলোচনা করেই গলির মুখে বোর্ড বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে গৃহকর্তা বা কর্ত্রীর নাম ও বিশেষ নম্বর দেখে যে কেউ সেই বাড়ির দরজায় পৌঁছে যেতে পারবেন। শুধু তাই নয়, ওই বোর্ডে একটি কিউআর কোড দেওয়া হয়েছে। সেটি স্ক্যান করলেই গোটা পাড়ার ম্যাপ ফুটে উঠবে মোবাইলের স্ক্রিনে। প্রয়োজনে কাউকে হোয়াটসঅ্যাপ করে পাঠিয়ে দিলে তিনি ওই ম্যাপ দেখেই সরাসরি পৌঁছে যেতে পারবেন প্রতীমস লেনের নির্দিষ্ট বাড়িতে। এই গলিতে ১৭টি বাড়ি থাকলেও তার মধ্যে আপাতত নম্বর দেওয়া হয়েছে ১২টিতে। বাকি পাঁচটি বাড়িতে এখনও নম্বর বসেনি। -নিজস্ব চিত্র