নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বর্ষা এলেই বিষ্ণুপুর ১ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় সব চাষের জমিই ডুবে যায়। এই মরশুমে চাষ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন কয়েক হাজার কৃষক। তাই এবার বিকল্প উপায়ে চাষের পদ্ধতি বের করল ব্লকের কৃষিবিভাগ। খালের মধ্যে ভাসমান জমি তৈরি করে তাতে চাষের পথ দেখিয়েছে তারা। পরীক্ষামূলকভাবে ধানের বীজ রোপণ করে মিলেছে সাফল্য। এবার সবজি চাষেরও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তার জন্য তৈরি হয়েছে বাঁশের কাঠামো। এর মধ্যে মাটি ফেলে তার উপর চাষ করা যাবে। এতে জমির বদলে জলের মধ্যেই চাষ করা যাবে। এক্ষেত্রে বর্ষাকালে চাষিদের আর কোনও সমস্যা থাকবে না। কৃষি আধিকারিকরা বলেন, ধানচাষের জন্য কাঠের একটি কাঠামো বানিয়ে তার উপর কচুরিপানার একাধিক স্তর তৈরি করা হয়। তার উপর মাটি ফেলে চাষের জমি তৈরি করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে কচুরিপানা পচে গিয়ে কার্যত সারে পরিণত হয়েছে। তার সঙ্গে কিছু কেঁচো সারও মেশানো হয়েছিল। কিছুদিন ওই অবস্থায় ফেলে রাখার পর তাতে ধানের বীজতলা বসানো হয়। তারপর সেই কাঠামোকে খালে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। দেখা গিয়েছে, কয়েক মাস বাদে দিব্যি বড় হয়েছে ধান গাছ। এই পরীক্ষার কাজ হয়েছে ভান্ডারিয়া পঞ্চায়েত এলাকায়। সেখানে এই বর্ষায় একইভাবে সবজি চাষের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ব্লকের অন্যান্য জায়গায় যাতে কৃষকরা একইভাবে চাষ করেন, তার জন্য উৎসাহ দিচ্ছেন কৃষি আধিকারিকরা। এই ব্লকের অবস্থান অনেকটা কড়াইয়ের মতো। বর্ষায় একবার জল জমলে নামতে অনেকটা সময় লাগে। ফলে মাসের পর মাস জলের তলায় থাকে চাষের জমি। ফলে কৃষকরা চাষ না করতে পেরে অনেকেই পেশা পরিবর্তন করেন কিংবা ভিন রাজ্যে চলে যান কাজের জন্য। বছরের অন্যান্য সময়ের মতো যাতে তাঁরা ভরা বর্ষাতেও চাষ করতে পারেন, তারজন্যই বাড়তি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ব্লকের কৃষিবিভাগ। অনেকেই বলছেন, যেসব জায়গায় জল জমার সমস্যা আছে, সেখানে এই পদ্ধতিতে চাষ করলে কৃষকদের কোনও সমস্যা হবে না।-নিজস্ব চিত্র