প্রবল বৃষ্টিতে জল থইথই বর্ধমান চিড়িয়াখানা, চিতাবাঘ-ভাল্লুক, পাখিদের জন্য দুশ্চিন্তা
প্রতিদিন | ২৪ আগস্ট ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার, বর্ধমান: গত ২৮ ঘণ্টায় শুধুমাত্র বর্ধমান শহরেই বৃষ্টিপাত হয়েছে ২০০ মিলিমিটারের বেশি। যার ফলে বর্ধমান শহরের বহু ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। রাস্তায় হাঁটু সমান জল। বহু জায়গায় বাড়িতেও জল ঢুকে গিয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের জল উপচে ঢুকে পড়ছে বর্ধমানের রমনাবাগান অভয়ারণ্যে। ফলে, শুক্রবার রাত থেকেই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে এই চিড়িয়াখানা। শনিবার সকাল থেকে দর্শকদের জন্য দরজা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, চিড়িয়াখানার পশুপাখিদের সুস্থ রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, আগামী মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা রয়েছে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল মাঠে। কিন্তু সেখানেও জল জমে রয়েছে। মাঠ ঠিক করতে তৎপরতা শুরু প্রশাসনের। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জলমগ্ন হওয়ার কারণে চিড়িয়াখানার কোনও জীবজন্তুর ক্ষতি হয়নি। তবে, বেশ কিছু জীবজন্তু রয়েছে যারা দীর্ঘক্ষণ জলমগ্ন অবস্থায় থাকলে তাদের ক্ষতির সম্ভাবনা। শনিবার দর্শকের জন্য চিড়িয়াখানা বন্ধ রেখে জল বের করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোট দশটি পাম্পের মাধ্যমে বর্ধমান রমনা বাগানের জল বের করার কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। চিড়িয়াখানার ভিতরে থাকা দুটি পুকুরের জল বের করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। পাখিদের খাঁচায় ত্রিপল বা প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, খাঁচায় ফ্যান চালানো হয়েছে।
অন্যান্য জন্তুদের মধ্যে চিতা বাঘ, ভাল্লুক, হায়না এগুলিকে খাঁচার মধ্যে নির্দিষ্ট জায়গায় রাখা হয়েছে। জলমগ্ন এলাকায় যাতে না যেতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যদিকে, খাঁচার ভিতরে অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় হরিণদের থাকার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্ধমানের বিভাগীয় বনাধিকারিক সঞ্চিতা শর্মা জানান, পাম্পের মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব জল বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তারামণ্ডল সংলগ্ন নহর থেকে জল উপচে চিড়িয়াখানার ভিতরে প্রবেশ করেছে। শুক্রবার রাত থেকেই পশুপাখিদের নিরাপদ রাখার চেষ্টা করছেন বনদপ্তরের কর্মীরা। জলমগ্ন পরিস্থিতিতে পশুপাখিদের মধ্যে হরিণ, চিতাবাঘ এই দুই ধরনের পশুর ক্ষেত্রেই সবচেয়ে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অন্যান্য পশু পাখিরা এই ধরনের পরিবেশে সহনশীল। শনিবারের পর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম থাকলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। গত দুই দিনে বর্ধমান শহরে বৃষ্টিপাত হয়েছে ২০০ মিলিমিটারের বেশি।