• বাংলায় ঘুরে দাঁড়াতেই হবে, দলকে বার্তা বেবির
    আনন্দবাজার | ২২ আগস্ট ২০২৫
  • বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সব শক্তিকে একজোট করার কথা বলেই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করার বার্তা দিল সিপিএম। সেই সঙ্গে জোর দেওয়া হল জনজীবনের নানা দাবি-দাওয়া সামনে রেখে আন্দোলনকে জোরালো করার। দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক এম এ বেবির স্পষ্ট কথা, গোটা দেশে বামপন্থীদের শক্তি বাড়াতে হলে বাংলায় বামেদের ঘুরে দাঁড়াতেই হবে। তার জন্য মানুষের কাছাকাছি থেকে আন্দোলনের ধার বাড়াতে হবে। বেবি বা দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, কেউই অবশ্য তাঁদের বক্তব্যে সরাসরি কংগ্রেসের নাম করেননি।

    আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের জন্য সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিয়েই আলোচনা হয়েছে। বুথ স্তরে সংগঠনকে সাজানোর পাশাপাশি স্থানীয় প্রশ্নে ধারাবাহিক ভাবে আন্দোলনের কথা এসেছে। বেশির ভাগ জেলার প্রতিনিধিরাই আসন সমঝোতার প্রশ্নে দলের সিদ্ধান্ত দ্রুত স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। পরে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের সঙ্গে একটি পর্বে আলোচনা হয়েছে, দলের প্রচার পরিকল্পনা দেখভালের দায়িত্বে থাকা ‘ক্রিয়েটিভ টিমে’র সঙ্গে সমন্বয় রেখে কী ভাবে বিধানসভা এলাকা ধরে ধরে নানা বিষয় চিহ্নিত করে ময়দানে নামতে হবে। ডানকুনিতে সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনে ভোট-প্রস্তুতি নিয়ে যে বিশেষ অধিবেশন হয়েছিল, এই আলোচনা তারই সূত্র ধরে।

    রাজ্য কমিটির বৈঠকের পরে প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে সিপিএমের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভি এস অচ্যুতানন্দনের স্মরণ-সভায় ছিলেন বেবি, সেলিম, বিমান বসুরা। ভি এসের জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং গণ-আন্দোলনকে শক্তিশালী করার কথাই এসেছে তাঁদের বক্তব্যে। পরে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রসঙ্গে সেলিম বলেছেন, ‘‘এসআইআর নিয়ে তীব্র আন্দোলনের থেকেও বেশি দরকার বুথ স্তরে রেড ভলান্টিয়ারদের মতো হেল্পলাইন করা। হায়দরাবাদের এক গবেষকের গবেষণায় উঠে আসছে, নামের বানানে হেরফের থাকলেও নাম বাদ দিয়ে দেবে। তাই রাজ্যের আদালতগুলিতে হলফনামার আবেদন হচ্ছে নাম ঠিক করতে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বার বার বলছি, ভুয়ো ভোটার, মৃত ভোটারদের বার করো। কিন্তু প্রকৃত ভোটারদের বাদ দেওয়া যাবে না। এখানে ভোটে কারচুপি বিজেপি ও তৃণমূল মিলে করেছে। ডায়মন্ড হারবারে সব থেকে বেশি ভোট লুট হয়েছে।’’ আগামী ১ সেপ্টেম্বর সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী দিবসে বিভিন্ন বামপন্থী গণ-সংগঠনকে নিয়ে কলকাতায় সমাবেশ হবে বলেও জানিয়েছেন সেলিম।

    এ বারের বৈঠক থেকে রাজ্য কমিটিতে স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়েছে ৬ জনকে। যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিমাঙ্গরাজ ভট্টাচার্যকে ফের স্থায়ী আমন্ত্রিত করা হয়েছে রাজ্য কমিটিতে। যুব সংগঠনের রাজ্য সভাপতি অয়নাংশু সরকার, ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক ও রাজ্য সভাপতি দেবাঞ্জন দে ও প্রণয় কার্য্যীকেও একই ভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তার পাশাপাশিই কমিটিতে আনা হয়েছে আশা ছেত্রী ও ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তীকে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)