উল্টোডাঙা-কাঁকুড়গাছির বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের ব্যাপক সমস্যা, বাড়ছে নাগরিক অসন্তোষ
বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: উল্টোডাঙা, কাঁকুড়গাছির বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবলভাবে দেখা দিয়েছে পানীয় জলের সমস্যা। সকালে পুরসভার তরফে যে পানীয় জল সরবরাহ করা হয় তার চাপ (প্রেসার) কমে গিয়েছে। যার জেরে ঠিকমতো জল পাওয়া যাচ্ছে না। পানীয় জল কিনে খেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। বহু জায়গায় জলের চাপ বাড়াতে গিয়ে কল নিচু করা হয়েছে। ফলে অনেক জায়গাতেই সেই জলের পাইপলাইন কোথাও নিকাশি নালার সমান্তরাল হয়ে গিয়েছে। কোথাও নালার নীচে চলে গিয়েছে। এর ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উল্টোডাঙা হাডকো মোড় সংলগ্ন ‘বি আর এস-৩’ এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় আছে পুরসভার পানীয় জলের কল। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সেখানে জলের চাপ কম বলে অভিযোগ। পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের তরফে সেখানকার বিভিন্ন পানীয় জলের কলগুলির উচ্চতা খাটো করা হয়েছে। যাতে চাপ বেশি পাওয়া যায়। নতুন করে বানানো হয়েছে চাতাল। কিন্তু তাতে আরও সমস্যা বেড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, কলের উচ্চতা কমে যাওয়াতে বালতি, বোতল বসাতে সমস্যা হয়। জল নিতে দীর্ঘক্ষণ সময় লেগে যায়। উচ্চতা কমাতে কমাতে কলের থেকে রাস্তার উচ্চতা বেড়ে গিয়েছে। ড্রেনের ম্যানহোল উপরে, আর জলের কলের হাইট তার নীচে চলে গিয়েছে। মাঝেমধ্যেই এলাকার অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
অন্যদিকে জলের চাপ কম থাকায় জল প্রায় মিলছে না বলে অভিযোগ কাঁকুড়গাছি সেভেন এম খোট্টাবাগান অঞ্চলের বাসিন্দাদের। স্থানীয় বাসিন্দা বিবেক রায়, কিশোর ঘোষদের বক্তব্য, গত দু’বছর ধরে পানীয় জলের সমস্যা ভুগতে হচ্ছে। তবে এবার সেই সমস্যা আরও প্রবল হয়ে উঠেছে। সকালে জল আসে। কিন্তু ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই আর জল পাওয়া যায় না। সরু ফিতের মতো জল পড়ছে। অভিযোগ শুনে অফিসাররা বারবার এসেছেন। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। কাবুল কুণ্ডু নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, পুরসভার অফিসাররা বলছেন, ফেরুলে কোনও সমস্যা নেই। তাহলে কেন জল পাওয়া যাচ্ছে না! ওদের কাছে কোনও উত্তর নেই। কতদিন এভাবে আর জল কিনে খেতে হবে জানি না। একই পরিস্থিতি মানিকতলা মেইন রোড আনন্দপল্লি ভাঙা মোল্লা অঞ্চলে। স্থানীয় বাসিন্দা শিবানী সেন বলেন, আমার গলির ভিতরে বাড়ি। সেখানে যে কল রয়েছে, সেখানে দু’সপ্তাহ ধরে জল আসছে না। রাস্তার কলে গিয়ে জল তুলতে হচ্ছে। ৭৫-৮০ বছরের বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা রাস্তায় গিয়ে স্নান করছেন। পুরসভার আধিকারিকরা এসে দেখে গিয়েছেন। কিন্তু তিন-চারদিন হয়ে গেল কোনও সমাধান হল না। ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শান্তিরঞ্জন কুণ্ডু সমস্যা সম্পর্কে অবগত। তিনি বলেন, পানীয় জলের সমস্যা দিনের দিন বাড়ছে। এতদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্ষিপ্তভাবে অভিযোগ পেতাম। যতটা সম্ভব সমাধান করার চেষ্টা করতাম। জল সরবরাহ বিভাগের ডিজি থেকে শুরু করে স্থানীয় অফিসাররা সকলেই জানেন। কিন্তু সমস্যার স্থায়ী সমাধান এখনও হয়নি। বহু জায়গা থেকে জল না পাওয়া নিয়ে ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচিতে অভিযোগ করেন এলাকার বাসিন্দারা।