• পাঁচ-ছয়ের গেরো! মৃত বীথিকার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পড়ছে দেবাশিসের অ্যাকাউন্টে
    প্রতিদিন | ২১ আগস্ট ২০২৫
  • গোবিন্দ রায়, বসিরহাট:   মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। কিন্তু একটি সংখ্যার ভুলে সেই প্রকল্পের টাকা থেকে বঞ্চিত হলেন বাদুড়িয়ার গন্ধর্বপুর এলাকার বাসিন্দা বীথিকা দাস। টাকা ঢুকছে না! খোঁজ করতে চক্ষু চরকগাছ।

    অভিযোগ, ৪৭ মাস ধরে তাঁর লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ঢুকছে অন্য এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে বীথিকার। এমনকী বীথিকা দেবীর মৃত্যুর পরেও এই প্রকল্পের টাকা ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে পড়ছে বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে একাধিকবার বাদুড়িয়ার বিডিও অফিসে অভিযোগও জানিয়েছেন বীথিকা দাসের স্বামী। কিন্তু কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি বলে অভিযোগ।

    বীথিকা দাস নামে ওই মহিলার বাড়ি বাদুড়িয়ার গন্ধর্বপুর এলাকায়। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প ঘোষণা হওয়ার পর পরেই এই সুবিধা পেতে নাম নথিভুক্ত করেছিলেন তিনি। কিন্তু প্রায় ৪৭ মাস কেটে গেলেও সে টাকা পাননি। পরে যদিও বাদুড়িয়ার বিডিও অফিসে যোগাযোগ করলে জানতে পারেন, তাঁর নাম লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে নথিভুক্ত রয়েছে। কিন্তু সুবিধার টাকা চলে যাচ্ছে দেবাশিস বাছার নামে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে। আর তা ঘটছে শুধু ৫ আর ৬ এর গেরোয়। জানা যায়, বীথিকা দাসের অ্যাকাউন্টের শেষে রয়েছে ৫, কিন্তু ভুলবশত অ্যাকাউন্টের শেষে সংখ্যা দেওয়া রয়েছে ৬। আর তাতেই ঘটে যত গণ্ডগোল।

    আর এই পাঁচ এবং ছয়ের গেরোয় পাশের গ্রামের বাসিন্দা দেবাশিসের অ্যাকাউন্টে এই ৪৭ মাস ধরে ঢুকছে রাজ্য সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের টাকা। আর তা ফেরত দেওয়ারও কোনও দিন চেষ্টা করেননি দেবাশিসবাবু। আর এই তথ্য সামনে সামনে আসার পরেই বীথিকা দাস বাদুড়িয়ার বিডিও অফিসে দু’বার লিখিত অভিযোগ জানান। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান করা হয়নি। এর মধ্যেই গত জুন মাসে দীপিকা দাসের মৃত্যু হয়। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, এর পরেও অভিযুক্ত দেবাশিস বাছার অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে এই প্রকল্পের টাকা। সে টাকাও তিনি তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ।

    মৃত বীথিকা দাসের স্বামী দাবি করেন ”তাঁর স্ত্রীর প্রাপ্য টাকা দেওয়া হোক।” তবে স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে দেবাশিসবাবুর অ্যাকাউন্টে যে টাকা ঢুকেছে তা সরকারকে ফিরিয়ে দেওয়ারও আবেদনও জানিয়েছেন।

    তবে যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই দেবাশিস বাছার অবশ্য প্রথমে টাকা পাওয়ার কথা অস্বীকার করলেও পরে টাকা ফিরিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, ”আগামী ফাল্গুন মাসেই সব টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।” অন্যদিকে এই বিষয়ে কিছু জানেন বলে জানিয়েছেন বাদুড়িয়ার ব্লক আধিকারিক পার্থ হাজরা। তাঁর বক্তব্য, ”এই ব্যাপারে কিছু জানা নেই, এমন ঘটনা ঘটলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
  • Link to this news (প্রতিদিন)