• ডিগ্রিধারী এঞ্জিনিয়ারের চায়ের দোকান, তাঁকে দেখতেই দোকানে ভিড় করেন সকলে ...
    আজকাল | ২১ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: রয়েছে এঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি। তবু চায়ের দোকানকে সঙ্গী করেই চলছে জীবনযুদ্ধ! জলপাইগুড়ির মেধাবী এই যুবক চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন সৎভাবে করা কোনও কাজই ছোট নয়। সিভিল এঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিটেক পাস করেও তিনি স্থায়ী কাজের ব্যবস্থা করতে পারেননি। তাই অনেক ভেবে জলপাইগুড়ি ডিবিসি রোডের বাসিন্দা শুভদীপ ঘোষ শেষপর্যন্ত জীবিকার প্রয়োজনে সামাল দিচ্ছেন তাঁর বাবার চায়ের দোকান। এই ছোট্ট দোকানই এই মুহূর্তে তাঁর বেঁচে থাকার একমাত্র ভরসা।

    এক বেসরকারি কলেজ থেকে এঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়াশোনা শেষ করেছিলেন শুভদীপ। তাঁর বাবার স্বপ্ন ছিল—ছেলেকে উচ্চশিক্ষিত করে তুলবেন এবং তাঁর ছেলে বড় চাকরি করবেন। আসবে সংসারে স্বচ্ছলতা। টাকাপয়সা নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করতে হবে না। জীবন হবে সুরক্ষিত।  সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই ধার করে ছেলে শুভদীপের লেখাপড়ার  খরচ চালিয়েছিলেন বাবা শংকর ঘোষ। কিন্তু পাস করার পর কয়েক বছর কেটে গেলেও চাকরির বাজারের ঘোর অনিশ্চয়তা সবকিছুই উল্টে দিয়েছে। শংকর ঘোষের আক্ষেপ, 'ছেলেকে পড়াশোনা করিয়ে ভেবেছিলাম সে ভালো চাকরি করব এর ফলে সংসারে স্বস্তি আসবে। কিন্তু চাকরির বাজার এতটাই খারাপ যে ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রতিদিনই দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়।' শংকর ঘোষের এই চায়ের দোকান অনেকদিনের। এই দোকান চালিয়েই ছেলেকে পড়াশুনো করিয়েছেন। কিন্তু চাকরির অবস্থা দেখে ছেলেকে শেষপর্যন্ত নিজের দোকানেই নিয়ে এসেছেন শংকর।

    শুভদীপ জানান, কয়েকটি ছোটখাটো প্রজেক্টে কাজের সুযোগ পেলেও সেগুলো সবই ছিল অস্থায়ী। সরকারি চাকরি বা বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থানের জন্য সুযোগের অভাব তাঁর জীবনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মুহুর্তে যে সমস্ত চাকরি মিলছে তাতে সেলস বিভাগে দেওয়া হচ্ছে। এত টাকা খরচ করে পড়াশুনো করে সেলসে গিয়ে সামান্য বেতন। অথবা ভিন রাজ্যে বেঙ্গালুরু বা  পুনে তে গিয়ে বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করতে গেলে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

    সংশ্লিষ্ট মহল বলছেন, উচ্চশিক্ষা শুধু তখনই কার্যকর, যখন তার সঙ্গে সমান তালে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়। নইলে তরুণ প্রজন্ম শিক্ষিত বেকার হয়ে ভুগবে সুরক্ষিত ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তায়। এই ঘটনা শুধু শুভদীপের নয়—দেশের  অসংখ্য তরুণ-তরুণীর জীবনের প্রতিচ্ছবি। প্রশ্ন উঠছে, উচ্চশিক্ষার পরও যদি কাজের সুযোগ না থাকে, তবে কীভাবে মিলবে চাকরি ?
  • Link to this news (আজকাল)