আজকাল ওয়েবডেস্ক: কারখানায় কাজ করার সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হলেন এক শ্রমিক। কারখানায় উৎপাদিত গলিত পদার্থ তাঁর গায়ে পড়ে গেলে ঝলসে যান তিনি। এরপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানেই মৃত বলে ঘোষণা করা হয় তাঁকে। মৃত নবীন কুমার (২৭) বলে জানা গিয়েছে। তাঁর বাড়ি বিহারে। মঙ্গলবার রাতের শিফটে কাজের সময় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর থানার কমলপুর সংলগ্ন অঞ্চলে একটি বেসরকারি স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় কাজ করতেন বিহারের নওদা জেলার বাসিন্দা ওই শ্রমিক। অন্য দিনের মতো মঙ্গলবার রাতেও তিনি তাঁর কাজে ব্যস্ত ছিলেন। কাজ চলাকালীন হঠাৎ গরম 'স্ল্যাগ' ছিটকে এসে লাগে তাঁর শরীরে। জানা গিয়েছে, নবীন ছাড়াও আরও পাঁচজন এই ছিটকে আসা স্ল্যাগ-এ জখম হন। নবীনের শরীরে এতটাই বেশি পরিমাণ এই গরম পদার্থ পড়ে গিয়েছিল যে তাঁর শরীর পুরো ঝলসে যায়। কারখানার একটি সূত্রে জানা যায় ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। এরপর তড়িঘড়ি নবীন এবং বাকি আহত শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। বাকি গুরুতর জখম শ্রমিকরা এই মুহূর্তে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনায় শোকের ছায়া গোটা কারখানায়। আচমকা এরকম একটি ঘটনা ঘটে যাবে তা কেউই আন্দাজ করতে পারেননি। এর পাশাপাশি মৃত শ্রমিকের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের দুর্গাপুর কোর কমিটি। কোর কমিটির সদস্য বান্টি সিং বলেন, 'একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি। একজন ঠিকা শ্রমিকের ওই দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যু হয়েছে। আরও কয়েকজন জখম অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন। আমরা মৃত শ্রমিকের পরিবার যাতে সঠিক ক্ষতিপূরণ পায় এবং সেইসঙ্গে তাঁর পরিবারের একজন চাকরি পায় সেই ব্যবস্থাও করব। এর পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য নিরাপত্তার দাবিও করব।'
প্রসঙ্গত চলতি বছরেই আরও একটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটে দূর্গাপুরে। এপ্রিল মাসে ইস্পাতনগরীতে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটছে। ঘটনায় আহত যুবকের নাম সজল দেবনাথ (৩০)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই যুবককে ভর্তি করা হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। এই ঘটনাকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়ালো দুর্গাপুর থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিউটাউনের ১৭ নম্বর স্ট্রিটে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, সজল ১৭ নং স্ট্রিটে মাটির বাড়িতে থাকতেন। সেই বাড়ি থেকেই বিকট শব্দ শোনা যায়। স্থানীয়রা তড়িঘড়ি ছুটে এসে দেখেন কাতর আর্তনাদ করছেন ওই যুবক। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। স্থানীয়রা এবং দুর্গাপুর থানার পুলিশ মিলে সজলকে প্রথমে দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতালে, তারপর শোভাপুরের বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ঘটনার জেরে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি দুর্গাপুর সুবীর রায় বলেন, 'বারুদ নিয়ে কোনও পরীক্ষা করছিলেন ওই যুবকটি। তখনই কোনও কারণে আগুন ধরে যায়। সেই আগুনেই জখম হয়েছেন যুবকটি। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে বাড়ির চারিদিক। বম্ব স্কোয়াডকে খবর দেওয়া হয়েছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু হয়েছে।'