২৬-এর লক্ষ্যে নন্দীগ্রামে বিশেষ নজর অভিষেকের, দলীয় নেতাদের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক
হিন্দুস্তান টাইমস | ২০ আগস্ট ২০২৫
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর শক্ত ঘাঁটি নন্দীগ্রামকে এবার আলাদা করে গুরুত্ব দিতে চাইছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার কলকাতায় তমলুক সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, নন্দীগ্রাম নিয়ে বিশেষ বৈঠক করবেন তিনি। যদিও কবে সেই বৈঠক হবে তা এদিন খোলসা করেননি অভিষেক। তৃণমূল সূত্রের মতে, নন্দীগ্রামের ব্লক ও অঞ্চল স্তরের নেতাদের পাশাপাশি জেলার সভাপতি, চেয়ারম্যান এবং শীর্ষ নেতৃত্বকে ডেকে পাঠানো হতে পারে বৈঠকে।
এই ঘোষণা ঘিরেই জোর জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। কারণ, এতদিন অভিষেক সাংগঠনিক জেলাভিত্তিক বৈঠক করলেও কোনও নির্দিষ্ট বিধানসভা এলাকাকে আলাদা করে আলোকপাত করেননি। নন্দীগ্রামের জন্য ব্যতিক্রম করা মানেই, শুভেন্দু অধিকারীর দুর্গ ভাঙতে দল বিশেষ পরিকল্পনা সাজাচ্ছে। এমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে রাজনীতিতে আসা শুভেন্দুর উত্থান ঘটে নন্দীগ্রাম থেকেই । পরে দলবদল করে বিজেপিতে গিয়ে ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে এই আসন থেকেই মমতাকে হারিয়েই তিনি জাতীয় রাজনীতিরও শিরোনামে উঠে আসেন। সেই থেকেই নন্দীগ্রাম বাংলার রাজনীতির অন্যতম আলোচিত কেন্দ্র। শুধু বিধানসভা নয়, ২০২৩-এর পঞ্চায়েত থেকে ২০২৪-এর লোকসভা সব ভোটেই শুভেন্দু নিজের জমি ধরে রেখেছেন। ফলে ২০২৬-এর আগে এই আসনকে ঘিরে তৃণমূলের আলাদা প্রস্তুতি স্বাভাবিক বলেই মনে করা হচ্ছে।
দলীয় সূত্রের খবর, অভিষেকের কৌশল দ্বিমুখী। একদিকে, সাংগঠনিকভাবে নন্দীগ্রামকে মজবুত করা, অন্যদিকে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সরাসরি রাজনৈতিক লড়াইয়ের বার্তা দেওয়া। এজন্য নন্দীগ্রামে আলাদা একটি কোর টিম গঠন হতে পারে, যাদের দায়িত্ব হবে বুথভিত্তিক সমীকরণ শক্ত করা। দলের অভিজ্ঞ নেতারা বলছেন, এই পদক্ষেপই প্রমাণ করে যে তৃণমূল নেতৃত্ব ২০২৬-কে সামনে রেখে এখন থেকেই টার্গেটভিত্তিক প্রস্তুতিতে নামছে।
পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপির ধারাবাহিক সাফল্য নিয়েও বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিষেক। তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশে তিনি স্পষ্ট বলেছেন, লোকসভার ফল খারাপ হলেও বিধানসভায় লড়াই আলাদা। প্রতিটি আসনেই বিজেপিকে কঠিন চ্যালেঞ্জ জানাতে হবে। দলের ভেতরে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে, সেটাও বৈঠকে উঠে এসেছে। তবে অভিষেক সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, অভিষেকের নন্দীগ্রাম-কেন্দ্রিক বৈঠক আসলে একটি বড় রাজনৈতিক বার্তা। একদিকে দলের কর্মীদের উজ্জীবিত করা, অন্যদিকে বিজেপিকে জানিয়ে দেওয়া তৃণমূল এবার শুভেন্দুর ঘাঁটিতেই সবচেয়ে বড় আঘাত হানার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর এই প্রস্তুতির কেন্দ্রে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে।