• স্বাধীনতা লাভের পরও বিহারের পূর্ণিয়া জেলার অংশ ছিল ইসলামপুর মহকুমা
    বর্তমান | ১৫ আগস্ট ২০২৫
  • কাজল মণ্ডল, ইসলামপুর: দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম সহস্র বীর শহিদের ইতিহাস। তাঁদের আত্মত্যাগ ও বলিদানে দেশবাসী স্বাধীনতার সুখ পায়। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে যেমন রাজ্যগুলিকে যুক্ত করে গঠিত হয়েছে আজকের ভারত, তেমন পৃথক করে তৈরি হয়েছে নতুন দেশ। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক কাজকর্মের সুবিধার্থে এক রাজ্য থেকে সামান্য অংশ অন্য রাজ্যে অন্তর্ভুক্তও করা হয়েছে। পৃথক রাজ্য থেকে এরাজ্যে অন্তর্ভুক্তির উদাহরণ আজকের ইসলামপুর মহকুমা। স্বাধীনতার আগে এমনকী পরেও ইসলামপুর মহকুমা এলাকা পশ্চিমবঙ্গের অংশ ছিল না। ছিল বিহারে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক কাজকর্মের সুবিধার্থে স্টেট রি-অর্গানাইজেশন কমিশনের সুপারিশে ইসলামপুর মহকুমা এলাকাকে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।

    প্রশাসন সূত্রে খবর, বিহার রাজ্যের পূর্ণিয়া জেলার অংশ ছিল ইসলামপুর। ১৯৫৫ সালে স্টেট রি-অর্গানাইজেশন কমিশন ইসলামপুরকে এরাজ্যে যুক্ত করার সুপারিশ করে। ১৯৫৬ সালে বিহার থেকে পৃথক করে ইসলামপুরকে এই রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। সেসময় উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর মিলে একটিই জেলা ছিল। নাম ছিল দিনাজপুর। 

    ১৯৫৮ সালে ইসলামপুরে মহকুমা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ শুরু হয়। পরে থানা, জেলখানা, স্কুল তৈরি হয়। সেসময় ইসলামপুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা ছিল। ১৯৯২ সালের ১ এপ্রিল দিনাজপুর জেলা ভেঙে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা হয়। তখন থেকে ইসলামপুর উত্তর দিনাজপুর জেলার একটি মহকুমা। চোপড়া, ইসলামপুর, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া ও করণদিঘি থানা এলাকা নিয়ে এই মহকুমা। 

    যেহেতু অন্য রাজ্য থেকে এই এলাকা যুক্ত হয়েছে, তাই এখানকার সংস্কৃতিও কিছুটা ভিন্ন। ফলে এই এলাকার উন্নয়ন নিয়ে সরকারের বিশেষ উদ্যোগ ও পৃথক জেলার দাবি দীর্ঘদিনের। পৃথক জেলার দাবিও ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। 

    ট্রান্সফার এরিয়া সূর্যাপুর অর্গানাইজেশনের মুখপাত্র পাসারুল আলম বলেন, বিহার থেকে ৭৫৯ বর্গমাইল এলাকা পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত হয়। তাতে দার্জিলিং জেলার ফাঁসিদেওয়া থানার ১৯টি মৌজা বিহার থেকে আসা ইসলামপুরের অংশ ছিল। স্টেট রি-অর্গানাইজেশন কমিটির সুপারিশ ছিল, এই এলাকার উন্নয়নে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বিশেষভাবে কাজ করবে। কিন্তু তা হয়নি। ১৯৯২ সালে উত্তর দিনাজপুর পৃথক জেলা হয়। সেসময় হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছিল, ইসলামপুর মহকুমাকে পৃথক জেলা করার দাবিতে। নানা কারণে তা হয়ে ওঠেনি। তারপর থেকেই বিভিন্ন সংগঠন, মানুষজন ইসলামপুরকে পৃথক জেলার দাবিতে সরব হয়েছে। কয়েক বছর আগে রাজ্য সরকার পৃথক পুলিস জেলা করেছে। এতে প্রশাসনের লাভ হলেও সাধারণ মানুষের তেমন লাভ হয়নি। 
  • Link to this news (বর্তমান)