নাথুয়াহাটের গান্ধীবাদী স্বাধীনতা সংগ্রামী শৈলেন্দ্রকৃষ্ণ নাগ ছিলেন সমাজসেবকও
বর্তমান | ১৫ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, ধূপগুড়ি: ব্রিটিশ শাসন থেকে দেশমাতৃকাকে মুক্ত করতে পরাধীন ভারতে উত্তরবঙ্গের যে সংগ্রামীরা নিজেদের জীবনকে বিলিয়ে দিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম জলপাইগুড়ির বানারহাট ব্লকের নাথুয়াহাটের শৈলেন্দ্র কৃষ্ণ নাগ। তিনি ১৯৩০ সালে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগদান করেন। তিনি স্বদেশি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এজন্য তাঁকে কারাবরণ পর্যন্ত করতে হয়েছে। ১৯৭৭ সালে মৃত্যু হয় এই স্বাধীনতা সংগ্রামীর। শৈলেন্দ্রবাবুর আদি বাড়ি ছিল আলিপুরদুয়ার। সেখানেই ব্রিটিশ বিরোধী লড়াইয়ে তিনি যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে ষাটের দশকে তিনি বানারহাটের নাথুয়াহাটে চলে আসেন। তিনি ছিলেন গান্ধীবাদী।
মহাত্মা গান্ধী ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে তিনি কাছ থেকে দেখেছেন এবং তাঁদের সভায় যোগ দিয়েছেন। ভারত সরকার তাঁকে তাম্রপত্র দিয়ে সম্মানিত করে। তবে উত্তরবঙ্গের এই স্বাধীনতা সংগ্রামী সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের অনেকেই জানেন না। নাথুয়াহাটে তাঁর স্মৃতিতে কোনও রাস্তার নামকরণ পর্যন্ত হয়নি। নেই কোনও আবক্ষ মূর্তি। শৈলেন্দ্রবাবুর স্মৃতি ধরে রাখতে তাঁর নামে অন্তত একটি রাস্তার নামকরণ ও আবক্ষ মূর্তি স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন তাঁর পরিবার থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা।
শৈলেন্দ্রবাবুর বড় ছেলে স্বরাজ নাগ বলেন, ছোটবেলায় দেখেছিলাম বাবা আমার এক দিদির হাত থেকে বিদেশি চুরি খুলে ফেলেছিলেন। বিদেশে তৈরি জিনিস একেবারেই পছন্দ করতেন না বাবা। পরিবারের প্রতি তেমন মনোযোগ ছিল না বাবার। সম্পূর্ণভাবে নিয়োজিত ছিলেন দেশমাতৃকার সেবায়। নাথুয়াহটের প্রবীন নাগরিক প্রলয় দাস বলেন, শৈলেন্দ্রবাবু তো স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেনই, পাশাপাশি তিনি একজন সমাজসেবী ছিলেন। তাঁর নামে এখানে কোনও রাস্তার নামকরণ বা তাঁর মূর্তি স্থাপনের দাবি প্রশাসনের কাছে জানাব। ধূপগুড়ির বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায় বলেন, স্বদেশি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নাথুয়ার শৈলেন্দ্র কৃষ্ণ নাগ। এলাকাবাসীদের দাবি যুক্তিযুক্ত, বিষয়টি নিয়ে ভাবা হবে।