রাজা দাস, বালুরঘাট: তারিখ পে তারিখ! অধরা বিচার। আদালত চত্বরেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী এক বিচারপ্রার্থী। মৃত ওই ব্যক্তির নাম বাপি সরকার। বালুরঘাট থানার হোসেনপুর এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। যান ডিএসপি সদর বিক্রম প্রসাদ, বালুরঘাট থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাস। মামলার তারিখ না পাওয়াই কারণ নাকি অন্য কিছু তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দেহটি উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে এই ঘটনায় আদালত চত্বরে তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়।
জানা গিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা নাগাদ বালুরঘাট হাসপাতালে যান বছর পঁয়ত্রিশের বাপি সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সেই মামলার সূত্রেই আদালতে যাওয়া। দেখা করেন তাঁর আইনজীবী কৃষ্ণদাস দাসের সঙ্গেও। সেই সময় জানতে পারেন যে, এদিন তাঁর মামলার শুনানির কোনও তারিখ নেই। আইনজীবী কৃষ্ণ জানান, যা শুনে বেশ কিছুটা হতাশই নয়। কিন্তু এভাবে আত্মঘাতী হবেন তা কল্পনারও বাইরে ছিল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দুপুর নাগাদ আদালতের পিছন দিকে শৌচকর্ম করতে যাওয়া কয়েকজনের নজরে আসে একটি ঝুলন্ত দেহ। যা দেখে রীতিমতো আদালত চত্বরে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। চিৎকার চেঁচামেচিতে ছুটে আসেন আইনজীবী, ল’ক্লার্ক, বিচারপ্রার্থী-সহ আশপাশের মানুষজন। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনে। পরে জানা যায়, দেহটি বাপির। জানালার গ্রিলের সঙ্গে কাপড় বেঁধে আত্মঘাতী হন ওই ব্যক্তি।
ঘটনা প্রসঙ্গে মৃতের আইনজীবী কৃষ্ণদাস দাস আরও বলেন, ”বাপি আমার মক্কেল ছিল। ডাকাতি, মাদক সহ অন্তত ৮ টি মামলা রয়েছে।” তাঁর কথায়, ”সকালে দেখা হলে তাঁর মামলায় এদিন যে তারিখ নেই তা জানিয়ে দিয়েছিলাম। চেহারায় কিছুটা অসুস্থ ও উদ্ভ্রান্ত দেখে বাড়ি চলে যেতে বলি। কোথায় গিয়েছিল জানা নেই। পরবর্তীতে আদালতের পিছন দিকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।” তবে কেন এই ঘটনা তা এখন স্পষ্ট নয় বলেই জানান আইনজীবী।
ঘটনা প্রসঙ্গে ডিএসপি সদর বিক্রম প্রসাদ জানান, ওই ব্যক্তির নামে মামলা রয়েছে। বাকি বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বলে রাখা প্রয়োজন, গত কয়েকদিন আগেই কলকাতা হাই কোর্টে এক মহিলা নিজের গায়ের কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের চেষ্টায় কোনও রকমে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব হয়। এবার বালুরঘাট আদালত চত্বরে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা।