• পড়ুয়ারা ভার্চুয়ালি শুনল মুখ্যমন্ত্রীর কথা, কন্যাশ্রী দিবসে সংবর্ধিত কৃতি ছাত্রীরা...
    আজকাল | ১৫ আগস্ট ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি: সাড়ম্বরে পালিত হলো দ্বাদশ কন্যাশ্রী দিবস। বৃহস্পতিবার চুঁচুড়া রবীন্দ্র ভবনে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে রাজ্য নারী ও শিশু বিকাশ এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন হুগলির জেলাশাসক মুক্তা আর্য্য। উপস্থিত ছিলেন ধনেখালির বিধায়ক প্রাক্তন মন্ত্রী অসীমা পাত্র, সপ্তগ্রামের বিধায়ক প্রাক্তন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, অতিরিক্ত জেলা শাসক অমিতেন্দু পাল, সদরের মহকুমা শাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা, চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী, হুগলী জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুবীর চক্রবর্তী, নির্মাল্য চক্রবর্তী, হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার পুর প্রধান অমিত রায় প্রমুখ।

    উপস্থিত ছিল জেলার একাধিক স্কুলের কয়েকশ ছাত্রী। এদিন উপস্থিত সকলের সামনে কলকাতা থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বক্তব্য প্রেক্ষাগৃহে প্রচার করা হয়। 

    রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শেষে শুরু হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। জাতীয় ক্যারাটে প্রতিযোগিতা জয়ী শ্রেয়া সাঁতরা কে পুরস্কৃত করে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সূচনা করেন জেলা শাসক। তাঁর পর বিভিন্ন বিভাগে জেলার কৃতি ছাত্রীদের সংবর্ধিত করা হয়। নাচ, গান, পড়াশোনা, খেলা সহ নানান বিভাগে কৃতি ছাত্রীদের স্মারক, শংসাপত্র এবং আর্থিক পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি কন্যাশ্রী প্রকল্পে জেলার সেরা স্কুল এবং কলেজ গুলিকেও সন্মানিত করা হয়। চলে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

    এদিন ধনধান্য স্টেডিয়ামে কন্যাশ্রী প্রকল্পের দ্বাদশ বর্ষের উদযাপনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেখানেই জানানো হয়, ২০২৪-২৫ সালের কন্যাশ্রী রূপায়নের ভূমিকার নিরিখে প্রথম হয়েছে বাঁকুড়া, দ্বিতয় স্থানে পূর্ব বর্ধমান, তৃতীয় স্থানে পশ্চিম বর্ধমান, বিশেষ পুরষ্কার পেয়েছে ঝাড়গ্রাম এবং উত্তর দিনাজপুর। স্কুলগুলির মধ্যে প্রথম হয়েছে বরিশা গার্লস হাই স্কুল, দ্বিতীয় বেহালা সারদা বিদ্যাপীঠ ফর গার্লস, তৃতীয় স্থানে উচ্চ বালিকা বিদ্যামন্দির ফর উচ্চ মাধ্যমিক। কলকাতার কলেজগুলির মধ্যে এই প্রকল্পের রূপায়নে প্রথম হয়েছে বঙ্গবাসী কলেজ, দ্বিতীয় স্থানে বিবেকানন্দ কলেজ ফর উইমেন্স, তৃতীয় স্থানে আশুতোষ কলেজ। 

    এদিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বারেবারে যেমন তাঁর জমানার প্রকল্প কীভাবে সাধারণ মানুষকে এগিয়ে দিচ্ছে কয়েক কদম তা বলেন, তেমনই নানা দিকের কথা তুলে ধরেন বক্তব্যে।  বলেন নেদারল্যান্ডে ইউনাইটেড নেশনস-এর ফোরামে দাঁড়িয়ে থাকার আবেগঘন মুহূর্তের কথা। মেয়েরা সমাজে কী করতে পারে, সেকথা বলতে গিয়ে সমাজের নানা  খাতে মহিলাদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন তিনি। বলেন, 'আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, ২০১১ সালের পর থেকে, প্রাথমিক শিক্ষায় ২০১১-১২-তে মেয়েদের স্কুলছুটের হার ছিল পৌণে পাঁচ শতাংশ, আজ তা শূন্য। সেকেন্ডারিতে ২০১১-১২ বর্ষে মেয়েদের স্কুলছুটের হার ছিল ১৬.৩২ শতাংশ, ২০২৩-২৪-এ তা হয়েছে ২.৯ শতাংশ। হায়ার সেকেন্ডারিতে ২০১১-১২ বর্ষে মেয়েদের  স্কুলছুটের হার ছিল ১৫.৪১ শতাংশ, চলতি শিক্ষা বর্ষে তা ৩.১৭ শতাংশ। এটা কি গর্ব করার বিষয় নয়?'

    এই  সরকার মহিলাদের ক্ষমতায়নে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তাতে রাজ্যের নানা জেলার, নানা স্থানের কিশোরী, যুবতীরা যেভাবে উপকৃত হচ্ছেন, সেকথা বলতে নিয়ে নিজের ছোটবেলার পরিস্থিতির কথাও তুলে ধরেন। বলেন, সেই সময়ের সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেন এখনকার পড়ুয়াদের যেতে না হয়। বাবা-মায়েদের উদ্দেশে বলেন, 'আমি অনুরোধ করব, আপনারা মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেবেন না। তারা নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই গড়ে নিতে পারে। তাদের নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে দিন। তাদের আত্মনির্ভর হতে দিন। যখন সে  ১৮ বছর পূর্ণ করছে তখন সে ২৫ হাজার টাকা পাচ্ছে, সেই টাকা ব্যাঙ্কে রেখে দিন। একজন ছোট্ট বন্ধু এসে বলে গেল সে একটা বেকারি  করেছে। মেয়েদের বিয়ের সময়ের রূপশ্রী প্রকল্পেও ২৫ হাজার টাকা পায়। সুতরাং  বাবা মায়ের চিন্তার প্রয়োজন নেই। মেয়েরা যেমন সংসার চালায়, মেয়েরা দেশ চালায়, প্লেন চালায়, সারা বিশ্ব চালায়, পারে না বলে কোনও কথা মেয়েদের অভিধানে নেই।' মেয়েদের কোন বয়সে, কোন কোন প্রকল্প রাজ্য সরকার দিয়ে থাকে, সবুজ সাথী থেকে তরুণের স্বপ্ন, নানা প্রকল্পের উল্লেখ করেন তিনি। 
  • Link to this news (আজকাল)